নিজস্ব প্রতিনিধি: মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মীরা অশান্ত পরিবেশ গড়ে তুললে প্রতিরোধ গড়ে তোলে কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ। সেখানে বাধা পেয়ে বিজেপি মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা আশ্রয় নেয় সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরে। রেললাইনের পাথর নিয়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে। আরপিএফ কোনও বাধা দেয়নি। বরং তাণ্ডব চালানো বিজেপি কর্মীদের মদত জোগানোর মতো বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে।
বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে সবচেয়ে বেশি অশান্তির ঘটনা ঘটে সাঁতরাগাছিতে। মূলত পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আসা বিজেপি কর্মী ও সমাজবিরোধীরা সাঁতরাগাছি স্টেশনকে ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল। গোলমাল শুরু হতেই রেললাইন থেকে পাথর তুলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকে। চোখের সামনে বিজেপি কর্মীদের তাণ্ডব চালাতে দেখেও আটকানোর চেষ্টা চালায়নি আর পিএফ কর্মীরা। সাঁতরাগাছি স্টেশনের বেশ কয়েকজন হকার জানিয়েছেন, বিজেপির সমাজবিরোধীরা যখন জয় শ্রীরাম বলে স্লোগান তুলছিল তখন আরপিএফ কর্মীরাও সেই স্লোগানে গলা মিলিয়েছিলেন।
সাঁতরাগাছি স্টেশন এলাকায় জয়শ্রী রাম স্লোগান তুলে নির্বিবাদে তাণ্ডব চালাতে থাকে বিজেপির মদতপুষ্ঠ সমাজবিরোধীরা। কারও পরনে ছিল গেরুয়া গেঞ্জি। কেউ আবার পরে ছিলেন লাল টকটকে পাঞ্জাবি। কেউ কেউ মাথায় লাল ফেট্টি বেঁধে এসে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে রেললাইনের পাথর হাতে নিয়ে বলে – পুলিশকে পাথর ছুড়ব না কি রসগোল্লা খাওয়াব। দুষ্কৃতীদের এই গুন্ডামিতে সাঁতরাগাছি স্টেশনে ট্রেন থেকে নামা যাত্রীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ প্রাণ বাঁচাতে ঢুকে পড়েন স্টেশনের শৌচালয়ে। কয়েকজন মহিলা শিশুদের নিয়ে ইটের ঘা থেকে মাথা বাঁচাতে টিকিট কাউন্টারে ঢুকে পড়েন। রেলপুলিশ ছিল নীরব দর্শক। সাঁতরাগাছিতে গোলমাল প্রথমার্ধে থেমে গেলেও স্টেশন চত্বরে থাকা দুষ্কৃতীরা আরপিএফের পরোক্ষ মদতে দফায় দফায় তাণ্ডব চালাল টানা তিন ঘণ্টা। ক্যামেরার সামনেই বুক চিতিয়ে রেললাইনের পাথর ছুড়ে রক্তাক্ত করল হাওড়ার পুলিশ কর্মীদের।
এদিকে, আইনের গেরোয় হাওড়া পুলিশ প্রবেশ করতে পারল না সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরে। ফলে দাঁড়িয়ে রেললাইনের পাথরের ঘা তাদের হজম করতে হল। স্টেশনে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এমনকী তাণ্ডবের দরুণ স্টেশনের টিকিট কাউন্টারও বন্ধ করে দিতে হয়।