দিলীপ সুকান্তের সামনেই মারামারি বিজেপি কর্মীদের

Published by:
https://www.eimuhurte.com/wp-content/uploads/2021/09/em-logo-globe.png

Koushik Dey Sarkar

22nd October 2021 3:08 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্তমানকে নিয়ে প্রাক্তন বেড়িয়েছেন জেলা সফরে। উদ্দেশ্য দলের খুঁটিনাটি উত্তরসূরিকে বুঝিয়ে দেওয়া। যদিও অনেকেই আড়ালে মুখ টিপে হেসে বলছেন বর্তমান আদতে ট্রেনি নেতা। তাঁকে ট্রেনিং দিচ্ছেন পূর্বতন সভাপতি। তা সে যাই হোক না কেন, ঘটনা হচ্ছে এই জোড়া সভাপতির সামনেই অতি কদর্য মারামারি, হাতাহাতি, চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়িতে জড়িয়ে পড়লেন গেরুয়া শিবিরের নেতা থেকে কর্মীরা। শুধু তাই নয়, বিক্ষোভকারীরা দুই সভাপতির সামনেই প্রাক্তনের ‘কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ শ্লোগান যেমন তুললো তেমনি তাঁকে উদ্দেশ্য করে গো ব্যাক শ্লোগানও দিল। আর এসব মিলিয়েই উত্তেজনা ছড়ালো পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার দাঁইহাট পুরসভার বাগতিকর এলাকায় বিজেপির জেলা কার্যালয়ে।

শুক্রবার সকালে এই কার্যালয়েই বঙ্গ বিজেপির নবনির্বাচিত সভাপতিকে সম্বর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো সেখানে এদিন হাজিরও হয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সঙ্গে অবশ্যই ছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কার্যত দিলীপের পিছু পিছু বাধ্য ছাত্রের মতোই সুকান্তের আগমন ঘটে এখানে। যদিও তাঁদের আসার আগে থেকেই ওই কার্যালয়ে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছিল। তা থেকেই ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল উত্তেজনা। মূলত দলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ ও দাঁইহাট নগর কমিটির সভাপতি অনুপ বসুর অনুগামীদের মধ্যেই এই বিবাদ তুঙ্গে উঠেছিল। দিলীপ সুকান্ত পৌঁছাতেই দুই শিবিরের লোকেরাই একে অপরের বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে দিলীপ কার্যত হুমকি দিয়ে বলেন, ‘পুলিশ ডেকে লাঠিচার্জ করে বার করে দেব’। এরপরেই দুই শিবিরের লোকজনই হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি সভাস্থলে থাকা চেয়ার টেবিলও ভাঙচুর করা হয়।

সেই ঘটনার জেরেই বিজেপি সাধারন কর্মী ও সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, কৃষ্ণ ঘোষ ও অনুপ বসুর মতন নেতাদের জন্যই একুশের নির্বাচনে ফল খারাপ হয়েছে বিজেপি। ভোটের ফল ঘোষণার পর ওই নেতারা কর্মীদের কোনও খোঁজখবর রাখেনি। সেই ক্ষোভেই এদিন ওই দুই নেতার পদত্যাগের দাবি জানান দলের কর্মীদের একাংশ। অন্যান্য কর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আয়ত্তে আসে পরিস্থিতি। এদিনের অশান্তি প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির নয়া সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘যারা এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, দলের কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে তাঁরা বিজেপির কর্মী হতে পারেন না। যদি দেখা যায়, অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ বিজেপির সদস্য রয়েছেন তাহলে অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ দিলীপও জানান, ‘এরা বিজেপির কর্মী নয়। বিজেপির পতাকা নিয়ে কেউ বিজেপির কার্যালয়ে ভাঙচুর করতেই পারে না।’

যদিও বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘ভাঙচুরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। প্রতিবাদ একটু চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর কিছুই না। আমরা যারা কাউন্টিংয়ে ছিলাম মরতে মরতে বেঁচেছি। ৬৮ জন কর্মী আহত হয়েছেন, ২৬টা বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। ৭টা গুমটি ভাঙচুর হয়েছে। জেলা সভাপতি ও মণ্ডল সভাপতিদের বার বার ফোন করলেও আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। আমরা অবহেলিত অবস্থায় ছিলাম। এই জেলায় প্রচুর ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীরা ভোটের পর মার খেয়েছেন। পরবর্তী সময়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন, ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই যে জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ থেকে শুরু করে জেলা কমিটির কেউ আসেনি, ওরাই আজ চুপি চুপি বৈঠকটাও সেরে ফেলতে চাইছিল। ওদের লক্ষ্য কোনও ভাবেই রাজ্য সভাপতির কাছে যাতে বার্তা না যায়, এ জেলার দলের ভিতর বিক্ষোভ আছে। এর জন্য দায়ী দিলীপ ঘোষ। এই জেলা সভাপতিকে বাঁচানোর জন্যই উনি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে ঘুরছেন। দিলীপ ঘোষের সায় রয়েছে।’ এই বিক্ষোভকারীরাই এদিন দিলীপের সামনেই শ্লোগান তোলেন, ‘দিলীপ ঘোষের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও। দিলীপ ঘোষ গো ব্যাক।’

ঘটনা প্রসঙ্গে দিলীপ পরে সাংবাদিক বৈঠকে জানান, ‘আমাদের যাঁরা কর্মী সকলেই ঠিক আছেন। কিছু উটকো লোক নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে ভেবে এসেছিলেন দলে। বিরোধী পক্ষের রাজনীতি করাটা খুব কঠিন কাজ। শাসকদলের নানা অত্যাচার থাকে। এতেই অনেকে হতাশ হয়ে গিয়েছেন। অনেকে একটু ভয় পেয়েছেন। তবে ভয়ের কিছু নেই। আমাদের বিরোধী দলনেতা, রাজ্য সভাপতি সকলেই তরুণ, লড়াকু। পুরো রাজ্যে দল সুসংহত। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে এখানে সভাপতি আছেন, তাঁকে লিখিত জানাতে পারেন। এসব মানা যায় না। বিজেপির পতাকা নিয়ে বিজেপির কোনও কর্মীই ভাঙচুর করতে পারেন না। আমার বিশ্বাস তাঁরা বিজেপির কর্মী নয়। যদি থেকেও থাকেন, ভবিষ্যতে থাকবেন না। আমার মনে হয় এতে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও ইন্ধন আছে। ওদেরই পাঠানো লোক। যদি দেখা যায় বিজেপির কোনও কর্মী বা নেতৃত্ব এমন কাজ করেছে, তবে দল তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ব্যবস্থা নেবে।’

More News:

Leave a Comment

Don’t worry ! Your email & Phone No. will not be published. Required fields are marked (*).

এক ঝলকে

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

Alipurduar Bankura PurbaBardhaman PaschimBardhaman Birbhum Dakshin Dinajpur Darjiling Howrah Hooghly Jalpaiguri Kalimpong Cooch Behar Kolkata Maldah Murshidabad Nadia North 24 PGS Jhargram PaschimMednipur Purba Mednipur Purulia South 24 PGS Uttar Dinajpur

Subscribe to our Newsletter

396
মিশন দিল্লি, পিকের চাণক্যনীতি কতটা কাজ দিল মমতার?

You Might Also Like