নিজস্ব প্রতিনিধি: সোমবার রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ মাটিগাড়া রোডের ধারে পড়ে কাতরাচ্ছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। একদিকে প্রসব যন্ত্রণা, অন্যদিকে তীব্র নেশা এই দুই মিলিয়ে ওই তরুণীর এমনই ভয়াবহ অবস্থা যে গলার আওয়াজও ঠিকমতো বেড়াচ্ছিল না। কিন্তু তখনই বিষয়টি নজরে আসে দুজন পুলিশ কর্মীর। শীতের রাতে শিলিগুড়ি শহরতলি এলাকায় এমন দৃশ্য দেখে সময় নষ্ট করেননি সিভিক ভলান্টিয়ার এবং পুলিশের গাড়ির চালক। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে তাঁরাই তড়িঘড়ি অফিসে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন ওই তরুণীকে। এরপর মঙ্গলবার ওই তরুণী একটি সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। আর তারপর থেকেই সদ্য মা হওয়া ওই তরুণীকে নিয়ে কার্যত বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালের কর্মচারীরা।
ঘটনাটি শিলিগুড়ির। সোমবার রাতে শিলিগুড়ি সদর হাসপাতালেই ভর্তি করা হয় ওই তরুণীকে। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে একটি শিশুপুত্রের জন্ম দেন ওই তরুণী। তারপর থেকেই তাঁকে নিরন্তর নজরদারিতে রেখেছেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। তাঁরাই জোর করে শিশুটিকে স্তন্যপান করাতে বাধ্য করছেন ওই তরুণীকে। হাসপাতাল অবশ্য জানিয়েছে, সুস্থ আছে শিশু ও তার মা। তবে ওই তরুণী ভয়াবহ মাদকাসক্ত। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে ওই তরুণীকে অন্তত ৬ মাসের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠাতেই হবে। কিন্তু সেই সময়ে কে ওই সদ্যোজাত শিশুটির খেয়াল রাখবে, কি হবে তাঁর তা নিয়েই চিন্তিত কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি এখনও ওই তরুণীর বাড়ির কোনও সদস্যকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁচিশের ওই তরুণী জানিয়েছিলেন তাঁর বাড়ি কালিম্পঙে। তিনি শিলিগুড়ির একটি পানশালায় কাজ করেন। একাই শহরে থাকতেন। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত কালিম্পঙে ওই তরুণীর পরিবারের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই রাতে কেন তিনি একা রাস্তায় নেমেছিলেন, কোথায় যেতে চাইছিলেন সে বিষয়গুলিও এখনও স্পষ্ট নয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মা এবং শিশু দুজনেই সুস্থ থাকলেও সদ্যোজাতের একেবারেই খেয়াল রাখতে পারছেন না ওই তরুণী। এমনকি শিশুটির খিদে পেলে তাকে দুধ অবধি খাওয়াতে পারছেন না তিনি। এমতাবস্থায় নেশামুক্তির জন্য ওই তরুণীকে পুনর্বাসনে পাঠানো খুবই দরকার। কিন্তু তখন শিশুটিকে কার কাছে রাখা হবে কে ই বা তাঁর দেখভাল করবে তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।