নিজস্ব প্রতিনিধি: ওড়িশার জাজপুরে বাস দুর্ঘটনায়(Jajpur Bus Accident) মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৭। এদের মধ্যে ৪জন এ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার বাসিন্দা। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি আহতদেরও আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তাঁর নির্দেশে এদিন জাজপুরে যাচ্ছেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু(Sujit Basu)। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, চালক আচমকাই স্টিয়ারিংয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তার জেরেই দুর্ঘটনা। কেন চালক স্টিয়ারিংয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারালেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ। এই ঘটনার জেরে এদিন ট্যুইট করে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে জাজপুরের দিকে রওনা হয়ে গিয়েছেন সুজিত বসু। তিনি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে উদ্ধারকাজ সামলাবেন।
এর পাশাপাশি মমতা তাঁর ট্যুইটে লেখেন, দুর্ঘটনায় মৃত এবং আহতদের অনেকেই বাংলার বাসিন্দা। রাজ্য সরকার অকুস্থলে আধিকারিক, জিনিসপত্র, অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাচ্ছে। আটকে পড়া যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে বাসও পাঠানো হয়েছে। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে(Medinipur Medical College and Hospital) আহতদের জন্য বেড রিজার্ভ করে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে ভর্তি করিয়ে যাত্রীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। আইন মোতাবেক মৃতদের পরিবার এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা করবে রাজ্য সরকার। রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সরকারি আধিকারিকেরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। এদিকে এখনও পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় যে ৭জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে তাঁদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা যান ২জন। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আরও ৫জন মারা যান। এর মধ্যে বাংলার বাসিন্দা ৪ জন। বাসটিতে মোট ৫৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ৪০ জনেরও বেশি যাত্রী এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন বলে খবর। তার মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। ১০ জন যাত্রী আইসিইউতে ভর্তি। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থায়ই আশঙ্কাজনক। তাই আরও মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে দুর্ঘটনা নিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, চালকের গাফিলতির কারণেই এই বাস দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হবে। ওড়িশার পরিবহণ এবং সড়ক নিরাপত্তার অতিরিক্ত কমিশনার লালমোহন শেঠি সংবাদমাধ্যমকে এদিন জানিয়েছেন, বাসটির অবস্থা ভালো ছিল। রক্ষণাবেক্ষণ করা হত। ২০২০ সালের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট রয়েছে। মার্চ মাসেই ইস্যু করা হয়েছিল ফিটনেস সার্টিফিকেট। দ্রুত গতিতে বাসটি চলছিল। সম্ভবত সেই কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। অথবা অন্য কোনও গাড়িতে ওভারটেক করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। ড্রাইভারের কোনও ফোন কল এসে থাকলে, সে ক্ষেত্রেও অমনযোগী হয়ে থাকতে পারেন তিনি। এখনও পর্যন্ত সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে এগুলির মধ্যে কোনও একটি ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার পর ব্রেক কষেননি চালক। ব্রেকে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। ফলে সেতু থেকে সোজা হুড়মুড়িয়ে নীচে পড়ে যায় বাসটি।