নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায়(Bengal) ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে(100 Days Work Project) দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে ভুরি ভুরি, এমন অভিযোগ বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। তাঁদের সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে মোদি সরকার(Modi Government)। সেই প্রতিনিধিদল নানা জায়গায় ঘুরে ভুরি ভুরি দুর্নীতি খুঁজে না পেলেও বেশ কিছু জায়গায় কাজের ক্ষেত্রে গরমিল খুঁজে পান। সেই সম্পর্কে তাঁরা রিপোর্টও পাঠান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। সেখান থেকে আবার চিঠি আসে নবান্নে(Nabanna)। যেখানে যেখানে গরমিল হয়েছে ১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে সেই সব জায়গায় পদক্ষেপ করুক রাজ্য সরকার, এমনটাই ছিল কেন্দ্রের চিঠিতে। সেই মোতাবেক রাজ্য প্রশাসনও ওই সব ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করে দিয়েছে। দিন দুই আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর-২ ব্লকের ২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ২২ লক্ষ টাকার জরিমানা করে জেলা প্রশাসন। এবার পালা দক্ষিণ দিনাজপুরের(South Dinajpur)। সেখানে ২টি ব্লকের ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪জন কর্মীকে শোকজ করার পাশাপাশি তাঁদের ২০ লক্ষ টাকার ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল জেলায় আসে। তাঁরা জেলার বংশীহারি ব্লকের ব্রজবল্লভপুর, এলাহাবাদ, গাঙুরিয়া এবং গঙ্গারামপুর ব্লকের গঙ্গারামপুর, নন্দনপুর, সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শন করেন। কোথায় কী কাজ হয়েছে যাচাই করে্ন। তাতে কী কী অনিয়ম তাঁরা পেয়েছেন, তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে তা কেন্দ্রের কাছে জমাও দেন। সেই রিপোর্ট দেখে কেন্দ্র সরকার ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনেই রাজ্য প্রশাসন পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ১০০ দিনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অরিন্দম দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হলেও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে কোনও গাছ খুঁজে পাননি। যে পরিমাণ মাটি কাটার কথা তার চেয়ে অনেক কম মাটি কাটা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কাজের কোনও হদিশও তাঁরা পায়নি। যে সমস্ত কাজে অনিয়ম তাঁরা পেয়েছেন সেই প্রকল্পগুলি নিয়ে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে দেখা যায় ২০ লক্ষ টাকার অনিয়ম হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় যুক্ত ১৪জন কর্মীদের শোকজ করা হয়েছে।
পাশাপাশি তিনি এটাও জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সময় মতো টাকা ফেরত না দিলে বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ২০ লক্ষ টাকার গরমিলের ঘটনায় এই ১৪জন কর্মীই কার্যত টাকা মারার ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাই এদেরকেই ওই পরিমাণ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা টাকা ফেরত না দিলেই তাদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে জেলা প্রশাসনের তরফে।