এই মুহূর্তে




‘‌উন্নয়নের পাঁচালি’‌ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী গড়ে দিলেন ১০ পর্যবেক্ষকের বাহিনী, নেপথ্য কারণ কী?‌

নিজস্ব প্রতিনিধি:‌ ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর লক্ষ্মীদের মাধ্যমে ফসল ঘরে তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের ফল প্রকাশ হতেই সেটা সবার নজরে এসেছিল। তারপর সেই টাকা বাড়িয়েও দেওয়া হয়েছিল। তার জেরে একের পর এক নির্বাচনী ফসল ঘরে এসেছিল। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সামনে নিয়ে এলেন ১৫ বছরের উন্নয়নের পাঁচালি। কেন এই নাম দেওয়া হল?‌ এই প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আসল তথ্য।

আজ নবান্নে তাঁর তিন মেয়াদের কাজের খতিয়ান (উন্নয়নের পাঁচালি) প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমাদের মা–ঠাকুমারা পাঁচালি পড়তেন। এখনও গ্রামের কিছু কিছু জায়গায় সেই চল রয়েছে। কিন্তু বহু জায়গাতেই এখন তা আর হয় না। সেই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতেই আমরা পাঁচালি শব্দটা ব্যবহার করলাম। পাঁচালির মধ্যে দিয়ে মানুষের ঘরে যে ভাষা ব্যবহার হয় সেটি মাটির ভাষা। সেগুলি মানুষ শুনতে পছন্দ করতেন। এখন তো সেসব প্রায় উঠে গিয়েছে। গ্রামের দিকে এখনও হয়। তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালানো, কেউ আজান করে, কেউ প্রণাম করে, কেউ চার্চে যায়। যে যার মতো করে। আগের দিনের সেই গৌরবকে গৌরবান্বিত করার জন্য পাঁচালি আকারে একটা ছন্দ বেঁধেছি। ইমন সেই গান পরিবেশন করবে।’

এই কথা বলার মধ্যে দিয়ে মহিলা ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখলেন। মহিলাদের কথা তুলে ধরে তাঁদের সম্মানিত করলেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর সরকারের একাধিক সামাজিক প্রকল্প, পরিকাঠামো উন্নয়ন, খরচের হিসাব তুলে ধরা হয়। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে ডেকে নেন সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তীকে। ইমন কীর্তনের আঙ্গিকে ‘পাঁচালি’ পাঠ করেন। সেই পাঁচালিতেও আবার সরকারি প্রকল্প থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছিল। ইমনের গান শোনার পর তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত শিল্পীদেরও উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌দ্রুত এই গান বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে’‌।

‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নামকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আগে বুঝিয়েছিলেন, তিনি ‘লক্ষ্মী’কে বাঙালির ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চান। আর যেভাবে উপভোক্তা বেড়েছে এই প্রকল্পের তাতে ‘লক্ষ্মী’ ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। এবার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী ‘পাঁচালি’ বাঙালির করে ঢুকিয়ে দিতে চাইলেন। এই ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ নাম ব্যবহার আসলে হিন্দুধর্মের সঙ্গে যুক্ত। যা অত্যন্ত ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। কারণ, বিজেপির অস্ত্র হিন্দুত্ব। সেটাকে কমব্যাট করতেই ‘‌পাঁচালি’‌ অস্ত্রে শান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‌আগামী বছর মে মাসে আমাদের সরকারের ১৫ বছর পূর্ণ হবে। এই সাড়ে ১৪ বছরে আমাদের সরকার কী কী কাজ করেছে সেটা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরছি। আমরা রাজ্যবাসীর কাছে দায়বদ্ধ। রাজ্যের কর এবং রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৫.৩৩ গুণ। আর মূলধনী ব্যয় বেড়েছে ১৭.৬৭ শতাংশ। সামাজিক ক্ষেত্রে ১৪.৬৪ শতাংশেরও বেশি। কৃষিক্ষেত্রে ব্যয়বৃদ্ধির পরিমাণ ৯.১৬ গুণ।’‌

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেন, বিধানসভা নির্বাচনের কাজের মধ্যেও সাধারণ মানুষের কাজ গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় আবাস, সড়ক, জলসংযোগ, স্বাস্থ্য–সহ সব কাজের গতি যেন কম না হয়। আর তাই ১০ জন আধিকারিকের একটি পর্যবেক্ষক বাহিনী গড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই পর্যবেক্ষণের কাজ তদারকি করার জন্য একটি ‘মনিটরিং টিম’ গঠন করতে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‌রাজ্যে ২ কোটি ২১ লক্ষ পরিবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছে। ১ কোটি ছাত্রীকে দেওয়া হচ্ছে কন্যাশ্রী। রূপশ্রীর আওতায় ২২ লক্ষ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে বাজেট ৬ গুণ বেড়েছে। ২ কোটি ৪৫ লক্ষ পরিবারকে স্বাস্থ্যসাথী দেওয়া হচ্ছে। আবাস যোজনায় ৬৭ লক্ষ ৬৯ হাজার বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।’‌

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

হুমায়ুনের ‘বাবরি মসজিদ’ নিয়ে সুর চড়ালেন সিদ্দিকুল্লা

বঙ্গে ডিমের দাম বাড়ছে কেন?‌ কেন্দ্রকে দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী

কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েই মৌবনীর বিয়ে, বাকি মেয়েদের পাত্রের সন্ধান কী পেলেন জাদুকর?

‘‌উন্নয়নের পাঁচালি’‌ নিয়ে অপপ্রচার বরদাস্ত নয়, সতর্কবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

প্রতিবন্ধকতা যুক্ত ব্যক্তিদের রোজগারে মেলার উদ্বোধনে বিশেষ বার্তা মন্ত্রী শশী পাঁজার

SIR আতঙ্কে অসুস্থ ও মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ