নিজস্ব প্রতিনিধি: গত বছরের শেষ দিকে প্রায় ১ সপ্তাহের সফরে উত্তরবঙ্গে(North Bengal) গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই সময় তিনি দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় পা রাখলেও তাঁর পা পড়েনি কোচবিহার জেলায়(Coachbehar District)। যদিও তিনি জানিয়েছিলেন খুব শীঘ্রই তিনি কোচবিহারে আসবেন। সেই কথা রাখতে চলেছেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৯ জানুয়ারি কোচবিহারে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহার শহরের রাসমেলা ময়দানে তিনি সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোদ দেবেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আসার বিষয়ে এখনও কোনও সরকারি বার্তা আসেনি বলে জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই সভার পাশাপাশি মদনমোহন মন্দিরে পুজোও দিতে যেতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে জেলা সফর করেন। আবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রী হিসাবেও তিনি জেলায় সাংগঠনিক সভা করতে পারেন। সম্ভবত রাসমেলা মাঠেই সেই সভা হবে। পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান হলেও তৃণমূলের দলীয় কর্মী-সমর্থকরাও সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। সাধারণ মানুষও সেখানে অংশ নেবেন। একই সঙ্গে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পঞ্চানন বর্মার(Panchanan Burma) জন্মদিন। তাঁর জন্মভিটা খলিসামারিতে রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের উদ্যোগে জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করা হয়। বিগত বছরগুলিতে রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এলেও, পঞ্চানন অনুরাগী ও তাঁর বংশধররা চাইছেন এবছর খলিসামারিতে(Khalisamari) জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসুন। ইতিমধ্যে এনিয়ে যোগাযোগও শুরু করেছেন পঞ্চানন বর্মা অনুরাগীরা। খলিসামারিতে পঞ্চানন বর্মার বংশধর যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী খলিসামারিতে মনীষীর জন্মভিটা দেখে যান। তাই মুখ্যমন্ত্রী ২৯ জানুয়ারি আসবেন নাকি ১৪ ফেব্রুয়ারি আসবেন তা নিয়ে কিছুটা দ্বন্দ্ব রয়ে গিয়েছে।
তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি যেহেতু সরস্বতী পুজো তাই ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কোনও অনুষ্ঠান না রাখতে পারেন। ওই দিন পঞ্চানন বর্মার জন্মভিটেতে মুখ্যমন্ত্রী সেই কারণেই হয়তো যেতে পারবেন না। তবে তিনি যদি চলতি মাসের শেষে কোচবিহার যান তাহলে সেই সময় তিনি পঞ্চানন বর্মার জন্মভিটেতে যেতে পারেন। রাজবংশী সম্প্রদায়ের একাংশের অভিযোগ, খলিসামারি ও পঞ্চানন বর্মাকে নিয়ে বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও, এখনও পর্যন্ত কোনওকিছুই করেনি। পঞ্চানন বর্মার বংশধরদের সামনে রেখে জন্মভিটায় শক্তিসঞ্চারিণী মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, সেই কাজও হয়নি। বিজেপি পঞ্চানন বর্মার ব্রোঞ্জের মূর্তি বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সাংসদ, বিধায়ক থাকার পরও কোনও কাজই হয়নি। সেই তুলনায় মুখ্যমন্ত্রী নিজে যা কথা দিয়েছেন সেই কথা তিনি রেখেছেন। আসুন। তৃণমূলের আমলে খলিসামারিতে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ে উঠেছে। তাই স্থানীয় মানুষও চাইছে মুখ্যমন্ত্রী খলিসামারিতে আসুন। এতে পঞ্চানন বর্মাকে যেমন আরও প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা যাবে, তেমনি সামনের লোকসভা নির্বাচনেও বাড়তি সুবিধা পাবে তৃণমূল।