24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 3:12 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) চালু করা আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলি(Socio-Economic Projects বাংলার বুকে নিম্নবিত্ত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষদের আর্থিক উন্নয়নে ইতিমধ্যেই সকলের নজর কেড়ে নিয়েছে। রাজ্যের আর্থিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও মমতার এই আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলি কার্যত অনুঘটক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার জেরে রাজ্যের আর্থিক উন্নতি যে ঘটেছে সেটা স্বীকার করছেন দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদরাও। কিন্তু রাজ্য সরকার যখন আর্থিক টানাটানির মধ্যে দিয়ে চলছে তখন মুখ্যমন্ত্রী চান না এই আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলির সুবিধা ভুয়ো উপভোক্তারাও পেয়ে যাক। সেই কারণেই এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার(Lakhir Bhandar), জয় জোহর, বিধবনা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, অসংগঠিত শ্রমিকদের সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প এই সব ক্ষেত্রেই এবার আধার(Aadhar Card) সংযোগ বাধ্যতামূলক করতে চলেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন(Nabanna) সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। তবে সে প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি আর্থিক সুবিধার যোগ নেই সেখানে আধার সংযোগ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বচ্ছতা বজায় রাখার পাশাপাশি কাজে গতি আনতে ও ভুয়ো উপভোক্তা রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ২০টি দফতরের ১৩৩টি ‘ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার স্কিমে’ নথিভুক্ত উপভোক্তা ও নতুন আবেদনকারীদের জন্য আধার নম্বর সংযোগ বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের সব আর্থসামাজিক প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক কোটি উপভোক্তা ও নতুন আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে। কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার সব রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক করায় দেড় কোটিরও বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। সেই ঘটনা দেখেই মুখ্যমন্ত্রী এখন চাইছেন রাজ্যের সব আর্থসামাজিক প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত উপভোক্তাদের অস্বচ্ছতা রুখতে। যারা প্রকৃত অর্থেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার তা তাঁরা পান, কিন্তু যারা পাওয়ার অধিকারী নয় সেই সব না যেন বাদ যায়। এটাই চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই কারণেই আধার সংযোগের সিদ্ধান্ত।
কেন্দ্র কোভিডকালেই নির্দেশ দিয়েছিল, সরাসরি নগদ পাঠানোর সরকারি প্রকল্পে আধার সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করা হোক। কিন্তু সেই পথে হাঁটতে চায়নি নবান্ন। কারণ, সাধারণ মানুষের তরফে আপত্তি ওঠার আশঙ্কা ছিল। পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয়, যৌথ এবং রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পে ভুয়ো উপভোক্তা সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ ওঠায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। বরঞ্চ সরকারি অর্থের অপচয় রুখতে প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি আধার সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবা হয়। এনিয়ে কিছুদিন আগে আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত নেওয়া হয়। সরকারি বিধিতে না থাকলেও একই ব্যক্তি একাধিক প্রকল্পের টাকা পাচ্ছে—এমন অভিযোগ ভূরি ভূরি। অথেন্টিকেশন না থাকার জন্যই এই হাল। তাই এবার সার্বিক আধার সিডিং-এর এই মেগা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। যদিও, নবান্নের তরফে রাজ্যের সব জেলাশাসককে জানানো হয়েছে, আধার ও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলেও দুয়ারে সরকার শিবিরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন জমা নিতে হবে। যদিও সেই আবেদন গৃহীত হওয়ার পরে আধার সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক ভাবেই করতে হবে উপভোক্তাকে।