ক্ষমতা থাকলে গ্রেফতার করো, জেলে থেকে জেতাবো! বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ মমতার
Share Link:

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঁকুড়া, ইতিহাসের মল্লভূম। এক সময়কার লালদুর্গ। এই লালদুর্গেরই পতন ঘটিয়ে পরিবর্তনের পরে জেলার দখল নিয়েছিল জোড়াফুল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই জেলাতেই দুটি লোকসভা আসনেই জোড়াফুলকে কিস্তিমাত করে পদ্মফুল ফুটিয়েছে গেরুয়া শিবির। জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। কিছুদিন আগে এই জেলাতেই পা রেখেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু পা রাখাই নয়, এই জেলাতে দাঁড়িয়েই তিনি বলে গিয়েছেন তৃণমূলকে উপড়ে ফেলে দেওয়ার কথা। সেই জেলাতেই গত ৩দিন ধরে পড়ে রয়েছেন বাংলার অগ্নিকন্যা। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি কোন পাল্টা চ্যালেঞ্জ গেরুয়া শিবিরকে ছুঁড়ে দেন সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করছিল জনতা। কার্যত জনসুনামির মঞ্চে দাঁড়িয়ে আত্মপ্রত্যয়ে ভরপুর নেত্রীও তাই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন গেরুয়া শিবিরের দিকে, ‘তোদের ক্ষমতা থাকলে আমাকে গ্রেফতার কর। আমি জেলে থাকব। আমি জেলে থেকে বাংলাকে জেতাব। এই চ্যালেঞ্জ করে গেলাম।’
শুনুকপাহাড়ির মাঠ আজ সাক্ষী থেকেছে জনসুনামির। যে দিকে চোখ গিয়েছে খালি কালো মাথা আর মাথা। নিজের পা খানাও ভালো করে দেখা যায়না এতই সে ঠাসা ভিড়। আট থেকে আশি, বুধবার সকাল থেকেই হয়েছিল শুনুকপাহাড়ি অভিমুখী। কাতারে কাতারে, দলে দলে, লাখো মানুষ গাড়ি ভাড়া করে ভিড় জমিয়ে এসেছেন অগ্নিকন্যার সভাতে। অনেকেই ভিড়ের চোটে মাঠ অবধি এসে পৌঁছাতেই পারেননি। আর এই ভিড় দেখেই মমতা খোলামাঠে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন রাম-বাম শিবিরকে, ‘বাঁকুড়ার একটা একটা করে আসন বুঝে নেব। একটাতেও বিজেপি থাকবে না। একটাতেও সিপিএম থাকবে না। ভোট এলেই তৃণমূলকে ভয় দেখানো শুরু হয়। যাতে তৃণমূল নেতারা ভয় পেয়ে ওদের সঙ্গে চলে যায়। ওরা বলে, হয় ঘরে থাকো, নয়তো জেলে থাকো। মনে রাখবেন, এই সব চমকানি, ধমকানি, টাকার কাছে আমি ভয় পাই না। আমি জেলে থাকব। আমি জেলে থেকে বাংলাকে জেতাব। লালুপ্রসাদ যাদবকে তো অনেকদিন ধরে জেলে পুরে রেখেছ। তাতে আটকাতে পেরেছ? বিহারে বিধানসভা ভোটে ওটা জেতা? ওটা হারা, ওটা জেতা নয়।’
বিজেপিকে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এদিন তৃণমূলকর্মীদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস করতে হলে ত্যাগী হতে হবে, লোভী হলে চলবে না। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। রাজনীতিতে তিন ধরনের লোক থাকে। লোভী, ভোগী আর ত্যাগী। সিপিএম হচ্ছে আজ সবচেয়ে বড় লোভী। বিজেপি হল ভোগী। আর তৃণমূল দল যদি করতে হয় তবে আপনাদের হতে হবে ত্যাগী। ওই লোভের পাল্লায় পড়বেন না। ভোট এলে দেখবেন কারও কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা জমা দিচ্ছে, ৫ হাজার টাকা জমা দিচ্ছে। এলাকায় লুকিয়ে লুকিয়ে টাকা দিচ্ছে। পুলিশের বিভিন্ন এজেন্সি, প্রেস–মিডিয়ার মাধ্যমেও টাকা দেওয়া হয়। অনেক টাকা হয়েছে না? হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা। আগে খেতে পেত না। একটা বিড়ি তিনবার টানত। আর এখন ফোন করে বলছে একজন তৃণমূলকর্মীকে, শোন তোকে ২ কোটি টাকা দেব চলে আয়। কোনও একটা এমএলএ-কে বলেছে এখন ১৫ লক্ষ দিচ্ছি পরে আরও দেব। এটা একটা রাজনৈতিক দল? বলতে লজ্জা হয়।’ এদিন এই কথা বলেও অবশ্য জননেত্রী সাধারণ মানুষকে পরমার্শ দিয়েছেন, ‘টাকা দিলে সেই টাকা নিয়ে নেবেন। মনে রাখবেন, ওই টাকা আপনাদের টাকা। ওদের টাকা নয়। নেবেন টাকা, ভোটের বাক্স করবেন ফাঁকা। ঠিক আছে? এখন থেকে মনে রাখবেন, টাকাটা ওদের নয়।’
শুনুকপাহাড়ি থেকে ফেরার পথে চোখে পড়লো বাঁকুড়ার রাস্তায় রাস্তায় নীল পোস্টার। তাতে লেখা শুধু দুটি শব্দ ‘দিদিই ফিরছেন’।ঞ্জানি না এটা বাংলা না বাঁকুড়ার দেওয়াল লিখন। তবে এদিনের শুনুকপাহাড়ি যে জনসুনামীর সাক্ষি থেকেছে তা গেরুয়া শিবিরের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল নেতাদেরও দাবি, লোকসভা ভোট ও বিধানসভা ভোটের প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ আলাদা। গত লোকসভা নির্বাচনে যাই হোক না কেন, আগামী বিধানসভা ভোটে জয় হবে তৃণমূলেরই। জয় হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুশাসনের, উন্নয়নের।



More News:
25th January 2021
25th January 2021
24th January 2021
24th January 2021
24th January 2021
24th January 2021
মানুষের ছ'কোটি মেরেছে শুভেন্দু, চিঠি হাতিয়ার করে তোপ অভিষেকের
24th January 2021
24th January 2021
24th January 2021
ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খুলবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রীই
23rd January 2021
সারা জীবন উৎসর্গ করেও যোগ্য সম্মান পাননি নেতাজি, মুখ খুললেন অনিতা পাফ
Leave A Comment