নিজস্ব প্রতিনিধি: পকেটে ছিল ১৪ হাজার ৮০০ টাকা। তা নিয়েই শৌচকর্ম গিয়েছিলেন সঞ্জীব শেখ। তারপর অসাবধানতাবশত সেই টাকা পড়ে যায় প্যানে। জল ঢেলে দেওয়ার পর বুঝতে পারেন চলে গিয়েছে টাকাও। তা জানিয়েছিলেন দুই ভাইকে। দুই ভাই সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলে সেই টাকা উদ্ধার করতে নেমে ছিলেন। আর সেখানে আটকেই মর্মান্তিক মৃত্যু (DEATH) হয়েছে তাঁদের।
মৃতরা পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকতেন কেরলে। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। মৃতদের নাম আলকাপ শেখ (৩২) ও আশরাফুল শেখ (২৯)। গত সোমবারের ঘটনা। মৃতদের দেহের (DEAD BODY) ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দেহ নিয়ে আসা হচ্ছে তাদের বাড়িতে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে কর্মসূত্রে সঞ্জীব শেখ ও মৃত ২ জন থাকতেন কেরলেই। এই ৩ ভাই পেশায় ছিলেন রাজমিস্ত্রি।
জানা গিয়েছে, কেরলের মালাপুরম জেলার ত্রিশূল নামক এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে থাকতেন তাঁরা। সঞ্জীব সোমবার কাছ থেকে ফেরার পর শৌচকর্মে গিয়েছিলেন। পকেটে ছিল পলিথিনে মোড়া এই বিপুল অঙ্কের টাকা। শৌচকর্ম করে প্যানে জল ঢালার পর তিনি বুঝতে পারেন টাকার বাণ্ডিল পড়ে গিয়েছে। এরপরে তিনি সেই কথা জানান ২ ভাই আশরাফুল ও আলকাসকে। সঞ্জীব জানিয়েছেন, ৩ ভাই মিলে শাবল দিয়ে মল জমা হওয়ার চেম্বারে ঢাকনা খোলেন। দেখতে পান সেপটিক ট্যাংকে ভাসছে টাকার বাণ্ডিল। তারপর নিয়ে আসা হয় মই। প্রথমে আলকাস নামেন ট্যাঙ্কে। তবে টাকা নিয়ে ওঠার সময় পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ট্যাংকে নামেন আশরাফুল। তিনিও পড়ে যান। এরপর সঞ্জীব নামতে গেলে অন্যান্য পরিচয় শ্রমিকরা জোর করে ধরে রাখেন তাঁকে।
জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। উপস্থিত হয় দমকল বাহিনী। উদ্ধার করা হয় ২ ভাইয়ের দেহ। স্থানীয় হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা দেহ পরীক্ষা করে জানান, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। প্রাথমিক অনুমান, সেপটিক ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু হয়েছে ২ ভাইয়ের। জানা গিয়েছে, মৃতদের দেহ ফিরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে বর্ধমানের বাড়িতে। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।