নিজস্ব প্রতিনিধি:অবিরাম বর্ষণ ও বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়ার ফলে উত্তরবঙ্গের চারটি জেলা কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই চার জেলায় ২৮ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৫৮০০ জনকে। কালিম্পংয়ে খোলা হয়েছে ৬টি ত্রাণ শিবির, যেখানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রায় ১২০০ জনকে।দার্জিলিংয়ে তিনটি শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে ৪১২জন,জলপাইগুড়িতে ১১টি শিবিরে ২৪৮৭ জনকোচ বিহারের ৮ টি শিবিরে ১৩০২ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।উত্তর সিকিমে বিপর্যয়ের কারণে উত্তরবঙ্গে(North Bengal) বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজ থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ ঘনমিটারেরও বেশি জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।যার ফলে কালিম্পংয়ের নিম্নধারার জেলাগুলিতে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার পুরোপুরি বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি।
লিখুভির-সেটিঝোরা অংশের কাছে গ্যাংটক(Gangtok) থেকে শিলিগুড়ি সংযোগকারী জাতীয় সড়ক – ১০ সম্পূর্ণভাবে ভেসে গিয়েছে। জানা গেছে ,তিস্তায় জলস্তর কমলে দ্রুত মেরামতির কাজ চালু হবে। চিফ ইঞ্জিনিয়ার সহ বিশেষ দল ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন।এদিকে ২৭ জন সেনা জওয়ান নিখোঁজ। মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য সচিবের মাধ্যমে জিওসি ইস্টার্ন কমান্ডকে জানিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্কটের এই সময়ে সেনাবাহিনীকে সমস্ত সাহায্য করতে প্রস্তুত।তিস্তা ব্যারাজে ৩টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে কালিম্পং জেলার রংপো এলাকায় এক পরিবারকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়। তাঁরা পরে নিজে থেকেই বাড়ি ফিরে যায় এবং আটকে পরে। এঁদের উদ্ধারে এক কলম সেনা মোতায়েন হয়েছে।
এনডিআরএফ-এর ৪টি দল বর্তমানে উত্তরবঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে। (জলপাগুড়ি-২, দার্জিলিং-১, শিলিগুড়ি-১)। এনডিআরএফ-এর আরও ২টি কোম্পানি জলপাইগুড়িতে পাঠানো হয়েছে। এনডিআরএফ ছাড়াও, ৭টি এসডিআরএফ দল বর্তমানে এই ৩টি জেলায় মোতায়েন রয়েছে।উত্তর সিকিমে মেঘ বিস্ফোরণের কারণে এবং পরবর্তীতে বিশাল জল ছাড়ার ফলে লোনাক লেকে ভাঙন এবং চুংথাং বাঁধে বড় ধরনের ভাঙন ধরেছে।
তিস্তা ব্যারাজ থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৮,০০০ মিটারের বেশি জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে যার ফলে কালিম্পংয়ের নিম্নধারার জেলাগুলিতে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নবান্নের তরফে যোগাযোগ করা হচ্ছে আইআইটি খড়গপুর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে।পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবকে ফোন করে ভোর ৩টের সময় খবর দিয়েছেন সিকিমের মুখ্যসচিব। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ, জিটিএ চেয়ারম্যান অনিত থাপা এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের সচিব অজিত বর্ধন এবং কৃষি সচিব ওঙ্কার সিং মীনা উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ তদারকি করতে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন।