নিজস্ব প্রতিনিধি, আলিপুরদুয়ার: জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে একশৃঙ্গ গণ্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিলেন বনকর্তারা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হতে চলা সুমারিতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা ৩০০ ছুঁয়ে ফেলবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
দীর্ঘ আশি বছর আগে সরকারিভাবে জলদাপাড়ায় গণ্ডার সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু চোরা শিকারিদের দৌড়ত্মে ১৯৮৪ সালের সুমারিতে অনেকটাই কমে গিয়েছিল গণ্ডারের সংখ্যা। মাত্র ১৪টি ছিল। এক সময় যখন মনে করা হচ্ছিল, রাজ্যের গৌরব একশৃঙ্গ গণ্ডার চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে জলদাপাড়া থেকে। কিন্তু বিশেষ পদক্ষেপ করে বন দফতর। মাত্র ত্রিশ বছরে সঠিক সংরক্ষণের ফলে এক লাফে ২০১৯ সালের সুমারিতে গন্ডারের সংখ্যা বেড়ে ২৩৭-এ পৌঁছে যায়। বন দফতরের আধিকারিকরা আশাবাদী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হতে চলা সুমারিতে ওই সংখ্যা ৩০০ ছুঁয়ে ফেলবে।
তবে মাদি ও পুরুষ গণ্ডারের সংখ্যা সমান হয়ে যাওয়াতে সঙ্গিনী দখলের লড়াই যে ভাবে বাড়ছে পুরুষ গন্ডারদের মধ্যে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বনকর্তারা। গণ্ডাররদের জীবনশৈলি অনুসারে, প্রতি একটি পুরুষ গণ্ডার পিছু তিনটি মাদি গণ্ডার রাখা হয়। জলদাপাড়ায় প্রাকৃতিক ভাবে গণ্ডারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২১৬.৫১ বর্গকিলোমিটারের জঙ্গলের পরিসর বৃদ্ধির বিষয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বন দফতর। দরকারে জলদাপাড়া সংলগ্ন ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়েতে আন্ডারপাস তৈরি করে তিতির জঙ্গল পর্যন্ত গণ্ডারের অবাধে চলাফেরা করার ব্যবস্থা করা হবে বলে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে এখনও জলদাপাড়ায় চোরা শিকারিদের চোরাগোপ্তা আনাগোনা বন্ধ করা যায়নি, তাও স্বীকার করে নিয়েছেন বনকর্তারা। বিষয়টি মাথায় রেখেই দুই জাতীয় উদ্যানের নিরাপত্তা আরও আঁটোসাটো করা হয়েছে। জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম বলেন, ‘রাজ্যের মধ্যে গণ্ডার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক অনন্য নজির তৈরি করেছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। কাজটা কারওর একার উদ্যোগে সম্ভব হয়নি। আমরা গ্রামবাসীদের নিয়ে একটা দল হিসেবে কাজ করছি। আশা করছি ২০২২ সালের সুমারিতে জলদাপাড়ায় গণ্ডারের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে।’