নিজস্ব প্রতিনিধি: উৎসবের আমেজের মাঝেই উত্তরবঙ্গে বড়সড় সাফল্যের মুখ দেখলো রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন। সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চেয়ে সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সদর শহর বালুরঘাটে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আত্মসমর্পণ করলো কেএলও জঙ্গি সুদীপ সরকার ওরফে পিন্টু বড়ুয়া কোচ। বছর ৩২’র এই তরুণ কামতাপুর লিবারেশন অর্গেনাইজেশনে সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে ছিলেন। কেএলও জঙ্গিও জীবন সিংহের ভিডিও বার্তা ভাইরাল করার পিছনে যেমন এই সুদীপের হাত ছিল তেমনি সে ভূটান, নেপাল, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছে। এদিন তাঁর আত্মসমর্পণের পরে তিনি যাতে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসতে পারেন তাঁর আশ্বাস দিয়েছেন জেলার পুলিশ কর্তারা।
জানা গিয়েছে, সুদীপের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের বড়াপাড়া এলাকায়। কেএলও জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়ে তাঁর নাম হয়েছিল পিন্টু বড়ুয়া কোচ। ২০০৫ সালে সুদীপ কেএলও-তে নাম লিখিয়েছিলেন। সেই সময় থেকেই তিনি বাড়ি ছাড়া হন। প্রশিক্ষণের সুবাদে নেপাল, ভূটান, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে যাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন অসমে কাটিয়েছেন। ২০১২ সালে সে ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। পরে জামিনে মুক্তি পেলেও সে ফের কেএলও সংগঠনেই ফিরে যায়। তবে কোভিডের হানায় সে বাধ্য হয় গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসতে। তারপরেই সে নিজে থেকে যোগাযোগ করে পুলিশের সঙ্গে।
এদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার রাহুল দে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন সুদীপকে সঙ্গে নিয়ে। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারের প্রতি আস্থা রেখেই সুদীপ আত্মসমর্পন করেছে। এই নিয়ে জেলার মোট পাঁচজন কেএলও জঙ্গি আত্মসমর্পণ করলো। আগের চারজনের ক্ষেত্রে সরকারের তরফেই চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুদীপের ক্ষেত্রেও তা করা হবে। এরা সকলেই সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণ করেছে। তাই এদের সকলের ক্ষেত্রেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে এরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। সুদীপের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হবে না।’