নিজস্ব প্রতিনিধি: জটিলতা আর কাটছে না পুরুলিয়া জেলার(Purulia District) ঝালদা পুরসভা(Jhalda Municipality) ঘিরে। কার্যত এই পুরসভায় বোর্ড গঠনের আগেই কংগ্রেস কাউন্সিলর(INC Councilor) তপন কান্দু খুন(Tapan Kandu Murdered) হওয়ার পর থেকেই সেখানে জটিলতা লেগেই রয়েছে। একের পর এক কাউন্সিলর পুরসভার চেয়ারম্যান হচ্ছে এবং তারপরেই অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হয়ে ক্ষমতা হারিয়ে বসে থাকছেন। আর বার বার এই চেয়ারম্যান বদলের জেরে ঝালদা শহরের বুকে উন্নয়নের কাজ কার্যত থমকে গিয়েছে। পুরসভার বর্তমান চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়কে(Sheela Chattopadhay) অপসারণের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) যে জোড়া মামলা দায়ের হয়েছিল সেই মামলার শুনানিতেই এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ঝালদায় আস্থা ভোট করাতে হবে জেলা শাসকের উপস্থিতিতে। তারপর ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
ঝালদা পুরসভা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলায় আগেই বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশে আস্থা ভোট হয়েছিল চলতি বছরেই। সেই আস্থা ভোটের দিন ঝালদা পুরসভায় জেলা শাসকের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সেখানকার মহকুমা শাসক। সেদিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায়। আস্থা ভোটের ব্যালট পেপার নিলেও ভোট দানে বিরত ছিল তৃণমূল(TMC)। সেই আস্থা ভোটের আগেই শীলা সহ ৫ কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বাকি ৪ কাউন্সিলর ছিলেন তপন কান্দুর আসনে জেতা তাঁর ভাইপো মিঠুন কান্দু, বিজয় কান্দু, পিন্টু চন্দ্র ও সোমনাথ কর্মকার। কিন্তু সেই সময় পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান থাকা কংগ্রেসি কাউন্সিলর তথা তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু(Purnima Kandu) সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। আবার তৃণমূলের ৫ কাউন্সিলরও শীলার পাশে দাঁড়াননি। শীলার অপসারণ চেয়ে পূর্ণিমা যেমন পৃথক মামলা দায়ের করেন, তেমনি তৃণমূলের ৫ কাউন্সিলরও আলাদা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলারই শুনানি ছিল এদিন।
দুটি মামলার এদিন একসঙ্গে শুনানি হয়। সেই শুনানি শেষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা এদিন জানিয়ে দেন, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ঝালদা পুরসভায় আস্থা ভোট করাতে জেলা শাসকের উপস্থিতিতে ভোট করাতে হবে। তবে এই ভোট প্রক্রিয়ার জন্য পুরসভার কাজের প্রক্রিয়া ব্যাহত যাতে না হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে সমস্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। উল্লেখ্য, শীলা চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ পুরসভার উপ পুরপ্রধান পদ থেকে পূর্ণিমা ইস্তফা দেন। এখন যা অবস্থা তাতে, আস্থা ভোট হলে শীলার হার নিশ্চিত। কেননা তাঁর পক্ষে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া শুধুমাত্র ৪জন কাউন্সিলরই রয়েছেন। অন্যদিকে তাঁর বিপক্ষে রয়েছেন তৃণমূলের প্রতীকে জেতা ৫ কাউন্সিলর, ১জন নির্দল কাউন্সিলর এবং ১জন কংগ্রেস কাউন্সিলর। এমতাবস্থায় ঝালদার জটিলতা কাটাতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি কোনও হস্তক্ষেপ না করেন তাহলে শীলার তরী কার্যত ডুবতে চলেছে।