নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশে যখন একের পর এক দুর্গা প্রতিমা ভাঙা নিয়ে চারিদিক তুমুল শোরগোল হচ্ছে, তখনই মালদহে দেখা গেল একেবারে ভিন্ন ছবি। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের উদ্যোগেই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কুমেদপুর তালগ্রাম হাটে অনুষ্ঠিত হল শতবর্ষ প্রাচীন আদিবাসী নৃত্যের মেলা। ওই আদিবাসী নৃত্য মেলায় হরিশ্চন্দ্রপুরসহ জেলার ১৫টি ব্লকের সাঁওতালি নৃত্যের দল এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছিল।
এই বছর শতবর্ষে পা দিল হরিশ্চন্দ্রপুর তালগ্রাম হাট অঞ্চলের আদিবাসী নৃত্যের মেলা। এই কুমেদপুর তালগ্রাম হাটে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ দূর্গা পূজার আয়োজন করে থাকে। এই পূজার অধিকাংশই ব্যয় ভার বহন করে সদলী চক হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা হলেও কুমেদপুর তালগ্রাম হাটের এই দুর্গাপূজা আয়োজনে কোন ত্রুটি রাখেন না মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। দুর্গাপূজার পাশাপাশি বিজয়াদশমী থেকে শুরু হয় মেলা। সাঁওতালি নৃত্য প্রতিযোগিতা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বহুযুগ ধরে। এলাকার হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ কুমেদপুর তালগ্রাম হাটের মাঠে ভিড় জমায় এই আদিবাসী নৃত্য প্রতিযোগিতা দেখার জন্য। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কুমেদপুর তালগ্রাম হাট সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি আয়োজিত এই আদিবাসী নৃত্য প্রতিযোগীতার মেলায উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকশি, আদিবাসী সেলের নেতা চুনিয়া মুর্মু, জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনা খাতুন , জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান সহ আরো অনেকে।
মেলা কমিটির আয়োজক আশরাফুল হক জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলা এই আদিবাসীদের নৃত্যের মেলা এলাকার ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। এলাকার হিন্দু মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই মেলা আয়োজন করে থাকে । হরিশ্চন্দ্রপুর দু নম্বর ব্লকের কুমেদপুর এলাকা প্রত্যন্ত অঞ্চল এলাকার অধিকাংশ মানুষ গরিব।
এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকশি। তিনি জানান, এই ঐতিহ্য মেলায় আজ অংশগ্রহণ করতে পেরে তিনি আনন্দে আপ্লুত। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এইভাবে হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির সৃষ্টি করছে যা আগামী দিনে জেলাসহ রাজ্যে উদাহরণ তৈরি করবে।