নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি চেষ্টা করেছিলেন ভোটের দিন কোচবিহারে(Coachbehar) গিয়ে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোট পরিচালনা করতে। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ উঠেছিল। যদিও নির্বাচন কমিশন(ECI) তাঁকে সাফ জানিয়ে দেয়, তাঁর কোচবিহার যাত্রা চলবে না। সেটা বিধিভঙ্গের সামিল হবে। কিন্তু এখন নয়া অভিযোগ, কমিশনের সেই বার্তাকেও ধার্তব্যের মধ্যে আনছেন না তিনি। মানে বাংলার রাজ্যপাল(Governor of West Bengal) সি ভি আনন্দ বোস(C V Anand Bose)। তিনি এখন কোচবিহারের জায়গায় আলিপুরদুয়ারে(Alipurduyar) যেতে চাইছেন। আর তাই তাঁর বিরুদ্ধে এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। তাঁরা সরাসরি কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে, ভোটে বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন রাজ্যপাল।
আগামিকাল অর্থাৎ ১৯ এপ্রিল দেশের ১০২টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। তার মধ্যে বাংলার ৩টি লোকসভা কেন্দ্রও রয়েছে। সেই ৩ কেন্দ্র হল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি। এই ৩ কেন্দ্রেই গতকাল বিকালেই প্রচারের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে এই ৩ কেন্দ্রই গিয়েছিল বিজেপির দখলে। কিন্তু এবার ওই ৩ কেন্দ্র নিয়েই বেশ চাপে রয়েছে বিজেপি। আর তাই রাজ্যপালকে মাঠে নামিয়ে ওই ৩ কেন্দ্রে জয়ের মুখ দেখতে চাইছে পদ্মশিবির। এখন এমনটাই অভিযোগ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। তাঁদের দাবি, কমিশন যেহেতু রাজ্যপালকে কোচবিহারে যেতে মানা করেছে, তাই তিনি কোচব্বিহারে না গিয়ে এদিনই আলিপুরদুয়ারে যেতে চাইছেন। কিন্তু যে সব কারণে কমিশন রাজ্যপালের কোচবিহার যাত্রা আটকেছে, সেই একই কারণে আলিপুরদুয়ার বা জলপাইগুড়ি কোথাও যাওয়া উচিত নয় রাজ্যপালের। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্য যে, সি ভি আনন্দ বোস বাংলার রাজ্যপাল না হয়ে বিজেপির রাজ্যপালের মতো আচরণ করছেন এবং কমিশনের কথাও কানে তুলছেন না।
উত্তরবঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন বাংলার রাজ্যপালকে সেখানে না-যাওয়ার পরামর্শই দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁরা জানিয়েছে, নির্বাচনের দিন রাজ্যের রাজ্যপাল যদি নির্বাচনক্ষেত্রে উপস্থিত থাকেন, তবে তা ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির পরিপন্থী। যে হেতু উত্তরবঙ্গের তিন কেন্দ্রে ভোটের প্রচার পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে এবং সাইলেন্স পিরিয়ড চলছে, তাই ওই এলাকার ভোটার ছাড়া আর কেউ সেখানে যেতে পারবেন না। ফলে রাজ্যপালও কোচবিহার গেলে তা হবে বিধিভঙ্গের শামিল হবে। এই একই নিয়মে তিনি আলিপুরদুয়ার বা জলপাইগুড়িতেও যেতে পারেন না। কিন্তু সেই সব বিধি না মেনে তিনি এখন আলিপুরদুয়ারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আর তাই তৃণমূলও কমিশনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে বাধ্য হল। দেখার বিষয় এখন কমিশন রাজ্যপালের এই সফর নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়।