এই মুহূর্তে




চাঁদ সওদাগরের ডিঙি মেলায় জনসমাগম , সীমান্তে ঐতিহ্যের টানে উৎসবের রঙ

নিজস্ব প্রতিনিধি কোচবিহার: তুফানগঞ্জ মহকুমার দক্ষিণ প্রান্তে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে প্রতিবছরের মতো এবছরও শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী চাঁদ সওদাগরের(Chand Swaudagar) ডিঙি মেলা। তুফানগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে কৃষ্ণপুর বাজার এবং সেখান থেকে আরও প্রায় ৪ কিলোমিটার ভেতরে জিরো পয়েন্টে এই ঐতিহাসিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামীণ সংস্কৃতি ও লোকবিশ্বাসের মিশেলে এই মেলা এখন পরিণত হয়েছে এক বিশেষ সামাজিক উৎসবে।স্থানীয়দের মতে, প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর মনসা পুজাকে কেন্দ্র করে এই ডিঙি মেলার আয়োজন হয়। এবছরও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৫ ও ৬ নভেম্বর দুই দিন ধরে চলবে এই উৎসব। দুদিনের এই মেলাকে ঘিরে উৎসবের আমেজে মুখরিত হয়ে উঠেছে সীমান্তবর্তী সমগ্র কৃষ্ণপুর এলাকা।

মেলায় বসেছে নানারকম দোকানপাট—মিষ্টি, খেলনা, লটারি, পোশাক, হস্তশিল্প থেকে শুরু করে গ্রামীণ খাবারের দোকান, নাগরদোলা ও বিনোদনের স্টল। চারদিকজুড়ে ঢাক-ঢোলের শব্দ, মাইকে লোকগানের সুর, আর মানুষের ঢল—সব মিলিয়ে এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সীমান্তের এই ছোট্ট গ্রামে।মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (BSF)-এর কড়া নজরদারি। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এত বড় জনসমাগমে যাতে কোনো ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বিএসএফ ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে পাহারায় রয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ দাস বলেন, “আগে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় ওপারের মানুষও এই মেলায় এসে অংশ নিতেন। সীমান্তের দুই পারের মানুষ তখন একসাথে উৎসব করত। কিন্তু এখন কাঁটাতারের বেড়া ও বিএসএফের নজরদারির কারণে ওপারের কেউ আর আসতে পারেন না। তবুও এই মেলা আমাদের ঐতিহ্য—তাই আজও হাজারো মানুষ ভিড় জমান।”

কথিত আছে, বহু বছর আগে এই মেলাস্থলের উপর দিয়ে একটি বিশাল নদী প্রবাহিত হত। ইতিহাস ও লোককথা অনুযায়ী, দক্ষিণ দেশীয় চম্পকনগরের বিখ্যাত ব্যবসায়ী চাঁদ সওদাগর বাণিজ্যের কাজে এই নদীপথে যাত্রা করতেন। একদিন তাঁর বিশাল নৌকাটি ওই নদীতেই ডুবে যায়। বহু বছর পর স্থানীয় চাষিরা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে চাষের সময় মাটির নিচ থেকে সেই নৌকার কাঠামোর কিছু অংশ উদ্ধার করেন।সেই নৌকাটিকে ঘিরেই গড়ে ওঠে আজকের চাঁদ সওদাগরের ডিঙি মেলা। মূলত সেই নৌকা বা ‘ডিঙি’ দেখতে প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ভিড় জমান মেলায়। কারও কাছে এটি ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতীক, কারও কাছে আবার ইতিহাসের অমূল্য নিদর্শন।মেলায় আসা এক প্রবীণ দর্শনার্থী বলেন, “চাঁদ সওদাগরের নাম শুনে বড় হয়েছি। আমাদের পূর্বপুরুষরা বলতেন, তাঁর বাণিজ্য নৌকা এখানেই ডুবে গিয়েছিল। আজ সেই ইতিহাসের সাক্ষী এই মেলা।”

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

এগরায় জমি বিবাদ ঘিরে সংঘর্ষ, দু’পক্ষের বাড়িতে আগুন

মানতে পারেননি ছেলের মৃত্যুশোক, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী মা

চন্দ্রকোণাতে ৬৯ হাজার টাকার খুচরো পয়সা দিয়ে নতুন স্কুটি কিনলেন চা বিক্রেতা, গুনতে সময় লাগলো ২ ঘণ্টা

ঠাকুরনগরের আমরণ অনশন মঞ্চে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন ঘোলার বাসিন্দা নিতাই মণ্ডল

কালনার রাস্তায় বালুরঘাটের এনুমারেশন ফর্ম! উদ্ধারের পর রাজনৈতিক তরজা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ