নিজস্ব প্রতিনিধি: পিসতুতো দেওরের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন স্ত্রী। সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যান স্বামী। আর তা থেকেই সংসারে শুরু হয়েছিল নিত্যদিনের অশান্তি। বিষয়টি পাঁচকান হতেও তাই বেশি সময় লাগেনি। মঙ্গলবার সকালেও লেগেছিল অশান্তি। কিন্তু বিকাল গড়াতেই সব চুপ। সবাই ভেবেছিলেন সেদিনের মতো বোধহয় অশান্তিতে দাঁড়ি পড়েছে। কিন্তু রাতের দিকে পিসতুতো দেওরের সঙ্গে বাড়ির বউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে হু হু করে পেরিয়ে যাওয়া একের পর এক গাড়ি দাঁড় করাবার চেষ্টা করছে দেখে খটকা লাগে প্রতিনেশীদের। এদিকে শূনসান বাড়ি তখন অন্ধকারে ডুবে। সেই কারনেই প্রতিবেশীরা দুইজনকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। আর তাতেই বিস্তর অসঙ্গতি ধরা পড়ে। দুইজনকে নিয়ে বাড়িতে আসতেই সিঁড়ির নিচ থেকে উদ্ধার হয় স্বামী তথা গৃহকর্তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে মালদা জেলার চাঁচোল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুরে।
জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তি বছর ৪০ এর রাম মুসোহার ছিলেন পেশায় রঙের মিস্ত্রি। তাঁর সঙ্গে বছর কুড়ি আগে বিয়ে হয় পঞ্চমীর। তাঁদের ১৮ বছরের এক ছেলেও আছে। গত বছর লকডাউনের সময় রামের বাড়িতে এসে থাকা শুরু করে তাঁর পিসতুতো ভাই মনোজ। তাঁর সেই সময় কোন কাজ না থাকায় রাম তাঁকে নিজের রঙের কাজে নিয়ে নিয়েছিল হেল্পার হিসাবে। কিন্তু সেই মনোজই পঞ্চমীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি রামের বুঝতে বেশি সময় লাগেনি। তা নিয়েই সংসারে শুরু হয়েছিল অশান্তি। গতকাল রাতে পঞ্চমী আর মনোজকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ি দাঁড় করাবার চেষ্টা করতে দেখে তাদের আটক করে প্রতিবেশীরা। আর তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে এনে ঘরের সব আলো জ্বালতেই সিঁড়ির নীচে প্লাস্টিকে জড়ানো অবস্থায় রামের রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, পরকীয়ার পথের কাঁটা সরাতে পঞ্চমী আর মনোহ মিলে এই খুন করেছে।
ঘটনার জেরে পাড়া প্রতিবেশীরাই খবর দেয় পুলিশকে। কিন্তু এই দীর্ঘসময় রাম আর পঞ্চমীর বছর আঠারোর ছেলের কোনও সন্ধান মিলছিল না। পরে পাশের গ্রাম থেকে তাকে আটক করে গ্রামবাসীদের একাংশ। তার কথায় বিস্তর অসঙ্গতি থাকায় পুলিশ তাকেও আটক করেছে। পুলিশ পঞ্চমী আর মনোজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে যে, মঙ্গলবার বিকালেই রামকে হাত-পা বেঁধে মাথা থেঁতলে খুন করে তারা দুইজনে মিলে। রামের ১৮ বছরের ছেলে সেই সময় সব কিচ্ছু দেখলেও সে সব চেপে যায়। খুনের পর রামের দেহ সিঁড়ির নীচে রেখে দিয়ে গোটা বাড়ি অন্ধকার করে এলাকা ছেড়ে পালাবার তাল করেছিল পঞ্চমী আর মনোজ। যদিও তার আগেই তারা ধরা পড়ে যায়। পুলিশ রামের দেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি পঞ্চমী আর মনোজকেও গ্রেফতার করেছে।