নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: শরীরে জড়িয়ে থাকা ২০ কেজি লোহার শিকলের কারণেই নৌকাডুবিতে মর্মান্তিকভাবে সলিল সমাধি হয়েছিল রাজশাহীর বাঘার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম মণ্ডলের। স্বেচ্ছায় গায়ে জড়ানো সেই লোহার শিকল ও পাঁচটি তালা খোলার চেষ্টা করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ব্যর্থ হতে হয়েছে। ফলে তালা-শিকল সহ কবরস্থ করা হল তাঁকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগেই যশোরে কাজে গিয়ে এক পীরের ভক্ত হয়ে উঠেছিলেন জহিরুল। আচমকাই নিজের শরীরে জড়িয়ে নিয়েছিলেন ২০ কেজি ওজনের লোহার শিকল। সেই শিকল যাতে না খুলে যায়, তার জন্য পাঁচটি তালা দিয়ে আটকে রেখেছিলেন শিকল। পরিবারের সদস্যরা বার বার শিকল খুলে ফেলার অনুরোধ জানালেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেন তাঁরা।
গত শুক্রবার ভারতের আজমিরে যাওয়ার উদ্দেশে যশোরের শার্সা থেকে রওনা করেছিলেন ৩৪ বছরের জহিরুল। ইছামতী নদী পার হওয়ার সময়ে আচমকাই ভেলা থেকে পড়ে যান। শরীরে আষ্টেপৃষ্ঠে ২০ কেজি লোহার শিকল জড়ানো থাকায় সাঁতার কাটতে পারেননি। ফলে সলিল সমাধি হয় জহিরুলের। নদীতে তার দেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। শার্সা থানার পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। জহিরুলের সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে পরিচয়পত্র দেখে শনাক্ত করেন। বাঘা থানার পুলিশকে পুরো ঘটনাটি জানানো হয়। পুলিশের কাছ থেকে খবর পরিবারের সদস্যরা শার্সা থানা থেকে জহিরুলের নিথর দেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। কবর দেওয়ার আগে শরীরে জড়ানো শিকল খোলার বহু চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই খোলা যায়নি। ফলে শিকল আর তালা সহ জহিরুলকে সমাধি দেওয়া হয়।