নিজস্ব প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ: কথায় বলে, ‘কুপুত্র যদি বা হয়, কুমাতা কদাপি নয়।’
কিন্তু এক গর্ভধারিনী যে কীর্তি করেছেন, তা শুনলে শিহরে উঠতে হয়। স্বামীর সঙ্গে মিলে মাদকাসক্ত ছেলেকে পিটিয়ে প্রথমে মেরে ফেলেছেন নারিনা হানিফনগর গ্রামের বাসিন্দা করুনা খাতুন। শুধু তাই নয়, নিহত ছেলের লাশ বাড়ির পিছনে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে স্বামীকে নিয়ে ভোটপ্রচারেও বেরিয়েছিলেন। নির্লিপ্তভাবেই ভোটপ্রচার চালাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শুক্রবার ‘খুনি’ মা ও বাবাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নারিনা হানিফনগরের বাসিন্দা আবদুল করিম ছোট থেকেই এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত ছিল। ইদানিং মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। প্রায়শই নেশা করে এসে বাড়ির লোকজনদের উপরে অত্যাচার চালাত। বাবা-মা থেকে শুরু করে পরিবারের অন্যদেরও মারধর করত। আবদুলকে বার বার শোধরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল পরিবারের সদস্যরা।
গত মঙ্গলবার রাতে অশান্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়। মাদক সেবন বাবা-মায়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে আবদুল। শেষ পর্যন্ত অতিষ্ঠ হয়ে ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেন আলহাজ আলী ও করুনা খাতুন। মারের চোটে মারা যায় আবদুল। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি পড়শিদের কাছ থেকে গোপন রাখেন আলহাজ ও তাঁর স্ত্রী। বাড়ির পিছনের সেপটিক ট্যাঙ্কে লুকিয়ে ফেলে লাশ। কেউ কিছু টেরও পায়নি।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ভোটে লড়ছেন করুনা। ছেলেকে খুন করার পরে গত তিনদিন ধরে নির্লিপ্তভাবেই প্রচার চালাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে দুর্গন্ধ বের হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। শুক্রবার পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করার পাশাপাশি ‘খুনি’ বাবা-মাকে-ও গ্রেফতার করেছে। শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মজিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’