নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রিয়াঙ্কা ম্যাজিক ডাহা ফেল। সোনিয়া কন্যার কোনও আবেদন, নিবেদনেই ভিজল না চিঁড়ে, কাজে এল না কোনও প্রতিশ্রুতিই। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর তৈরি যুদ্ধনীতির ওপর ভরসাই রাখতে পারলেন না উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষ। তারই ফলাফল এই লজ্জার হার। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড, যাকে এক সময়ে বলা হত কংগ্রেসের পীঠস্থান, সেই বুন্দেলখণ্ডের একাধিক কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীরা পেয়েছেন নোটার থেকেও কম ভোট। অর্থাৎ ওই সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে মানুষ কোনও রাজনৈতিক দলকেই ভোট দেননি। দেশের রাজনীতিতে এটা একটা বিরল ঘটনা। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত লজ্জার একটি হারও বটে।
ইতিহাসের পাতা ওলটালে দেখা যাবে একটা সময় ছিল যখন উত্তরপ্রদেশের এই বুন্দেলখণ্ডে একচেটিয়া রাজতব ছিল জাতীয় কংগ্রেস দলের। সদ্য স্বাধীন ভারতে এই বুন্দেনখণ্ডকে একটি মজবুত বিধানসভা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে সুশীলা নায়েরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সুশীলা নায়ের উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি থেকে বিপুল ভোটে ভয়লাভ করে ভারতের সক্রিয় রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন। তাঁকে সারা দেশের মানুষ মহাত্মা গান্ধির চিকিৎসক হিসাবে চিনতেন। পরবর্তীতে তিনি হল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরবর্তীতে এই বুন্দেলখণ্ড কংগ্রেসকে সুজন সিং বুন্দেলা, রাজা বুন্দেলা এবং প্রদীপ জৈন আদিত্যর মতো নেতাদের। এই বুন্দেলখণ্ড কংগ্রেসের কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, ২০০৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং উত্তরপ্রদেশের এই জেলার জন্য ৭২০০ টাকার আলাদা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। আর সেই বুন্দেলখণ্ডেই ২০২২-এর বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত লজ্জার হার হেরেছে প্রিয়াঙ্কার মহিলা সেনা।
বুন্দেলখণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা কেন্দ্র হল মৌরানিপুর। সেই মৌরানিপুরে রীতিমতো লজ্জার হার হেরেছে কংগ্রেস। এই কেন্দ্র দখল করেছে বিজেপি, আপনা দল জোট। জয়ী রেশমি আর্জ ৫৮,৫৯৫ ভোটে জয়ী হয়েছেন। সেখানে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৩৩২৩ টি ভোট। অন্যদিকে এই কেন্দ্রেই নোটায় ভোট পড়েছে ৩৪৭১ টি। একই ছবি বুন্দেলখন্ডের আরও একটি কেন্দ্র বান্দায়। এই কেন্দ্রেও কংগ্রেস প্রার্থী লক্ষ্মীনারায়ণ মাত্র ১৮৯৪টি ভোট পেয়েছেন, যেখানে নোটায় ভোট পড়েছে ১৯৯১টি। সবথেকে খারাপ অবস্থা বাবেরু কেন্দ্রে। যেখানে কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের প্রায় দ্বিগুণ ভোট পড়েছে নোটায়। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী গজেন্দ্র সিং পেয়েছেন মাত্র ২১১২টি ভোট। অন্যদিকে এই একই কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৩০৪৭টি।
