নিজস্ব প্রতিনিধি: স্কুল সার্ভিস কমিশনের(SSC) মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মোট ৭টি মামলার ক্ষেত্রে সিবিআই(CBI) তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখেছে কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। সেই নির্দেশের অঙ্গ হিসাবেই বুধবার সিবিআই কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সিবিআই তাঁকে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় উপদেষ্টা কমিটির ৫ সদস্যকেও। আবার একই সঙ্গে গতকাল রাতেই এসএসসি’র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন মাত্র ৪ মাস আগে দায়িত্ব নেওয়া সিদ্ধার্থ মজুমদার। তাঁর জায়গায় নতুন চেয়ারম্যান হন শুভ্র চক্রবর্তী যিনি নিজে আইএএস অফিসার ও রাজ্যের সমগ্র শিক্ষা মিশনের দায়িত্বে আছেন। কিন্তু সেই নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে রাতেই দায়ের হয় মামলা। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির অনুমতি সাপেক্ষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই মামলার শুনানি করেন ও নির্দেশ দেন রাতেই এসএসসি’র কার্যালয় আচার্য সদনে(Acharya Sadan) মোতায়েন হবে সিআরপিএফ(CRPF)।
রাতে কলকাতা হাইকোর্টে যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেই মামলার আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, এসএসসি’র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআই-কে সহযোগিতা করেছেন তাই তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে নতুন যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি এসএসসি’র কার্যালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে দিতে পারেন। হার্ড ডিস্ক-সহ সমস্ত তথ্য সংরক্ষণের দাবি ও তা সুরক্ষিত করে রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেন মামলাকারীরা। সেই মামলার শুনানি শুরু হয় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। শুনানিতে ভার্চুয়াল ভাবে অংশগ্রহণ করেন মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। একই ভাবে নিজের চেম্বারে বসেই মামলা শোনেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুনানিতে বিকাশরঞ্জন দাবি করেন, এসএসসি অফিসের ভিতরে কারা ঢুকেছে তার সিসিটিভি ক্যামেরা পরীক্ষা করা হোক। সেই সঙ্গে হার্ড ডিস্ক-সহ সমস্ত তথ্য সংরক্ষণের দাবিও জানান তিনি।
সেই শুনানি শেষের আদালত রায় দেয়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে এসএসসি-র সচিবকে সিসিটিভি ফুটেজ এনে আদাল্তে জমা দিতে হবে। সিবিআই যে হেতু তদন্ত করছে, তাই নথি ঠিক রাখতে সিআরপিএফের সাহায্য নিতে পারে তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী দুপুর ১টা পর্যন্ত এসএসসি অফিস ঘেরাও করে থাকবে। কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। একমাত্র সিবিআই আধিকারিকরা সেখানে যেতে পারেন। সল্টলেকের আচার্য সদন যা এসএসসি’র কার্যালয় সেখানে মোতায়েন থাকা পুলিশকর্মীরাও(Police) বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার আগে বার হতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেয় আদালত। কার্যত বিচারপতির চেম্বার থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসে ফোন করা হয়। রাত ২টো ৫০ মিনিটে সিআরপিএফ পৌঁছে যায় আচার্য সদনে। অভিযোগ, তাদের প্রথমে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আচার্য সদনের গেট বন্ধ ছিল। তবে ভিতরে থাকা পুলিশকেও বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়নি। প্রায় আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর গেট টপকে ভিতরে প্রবেশ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকালেও দেখা যায় সেই আচার্য সদন সিআরপিএফ বাহিনীর জওয়ানদের কড়া ঘেরাটোপে রয়েছে। কাউকেই সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি এসএসসি’র সচিবকেও এসে ফিরে যেতে হয়। আর তার জেরে পালটা প্রশ্ন ওঠে যেখানে আদালত নির্দেশ দিয়েছে এসএসসি’র সচিবকে সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে পোউঁছে দিতে হবে সেখানে সচিবকে কেন ঢুকতে দেওয়া হল না! যদিও সেই প্রশ্নের জবাব মেলেনি।