নিজস্ব প্রতিনিধি: তখনও কাঁটাতার দিয়ে ভাগ করা হয়নি বড় বাংলাকে। ১৮২ বছর আগে বালুরঘাটে সাহারায় বাড়িতে শুরু হয়েছিল দুর্গা পুজো। সেই ঐতিহ্য মেনে আজও প্রতি বছর দুর্গা পুজো আয়োজিত হয় সাহাবাড়িতে। আর বনেদি বাড়ির এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর মিলিত হয় দুই বাংলা।
শোনা যায়, ১৮২ বছর আগে বাংলাদেশের জামিরতা গ্রাম থেকে এক ব্যবসায়ী ব্যবসার সূত্রে এসেছিলেন এপার বাংলার বালুরঘাটে। ওই ব্যবসায়ীর নাম, বনমালী সাহা। সেই সময় বাংলাদেশের সঙ্গে বালুরঘাটের সরাসরি রেল যোগাযোগ ছিল। তিনিই প্রথম এই পুজোর প্রচলন করেন। সেই থেকে সাহারায় বাড়িতে ঐতিহ্য মেনে আজও দুর্গাপুজো হয়। আগের রীতি –রেওয়াজ মেনেই পুজো হয় আজও। সাহারায় পরিবারের বর্তমান সদস্যরা পুরনো পুজোর প্রথা আজও বহন করে চলেছেন। চালের ব্যবসায়ী বনমালী সাহা ব্যবসা করে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন। চাল ব্যবসায়ী বনমালী সাহা এক সময়ে পরিণত হন একজন জমিদারে। কথিত আছে, ওই ব্যবসায়ীর বিশ্বাস ছিল, তাঁর বিপুল সম্পদ বৃদ্ধির পিছনে মায়ের কৃপা রয়েছে। মায়ের কৃপা না থাকলে তার এত সম্পদ বৃদ্ধি হতো না। সেই জমিদারি আর না থাকলেও ঐতিহ্য মেনে পুজো আজও হয়।
বর্তমানে নিজ হাতে পুজোর আয়োজন করেন সাহারায় বাড়ির বর্তমান সদস্য কালীকৃষ্ণ সাহারায়। প্রাচীন প্রথা মেনে এখনও দুর্গার কাঠামো পুজো শুরু হয় বন্ধন ষষ্ঠী বা দ্বাপর ষষ্ঠীর দিন থেকে। শুধু পুজোর প্রথাতে নয় সাহারায় বাড়ির প্রতিমারও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে বেশকিছু। মায়ের ভোগ নিবেদনের ক্ষেত্রেও সাহারায় বাড়িতে রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়ম। সাহারায় বাড়ির বহু সদস্য বর্তমানে বাংলাদেশের বাসিন্দা। বালুরঘাটের এই পুজোতে তারা প্রতি বছর আসেন। এ বছরও কাঁটাতারের ভেদাভেদ মুছে মায়ের আরাধনায় ওপার বাংলা থেকে সদস্যরা আসবেন বলে জানিয়েছেন কালীকৃষ্ণ বাবু।