নিজস্ব প্রতিনিধি: সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election)। ইতিমধ্যেই সেই নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে দিয়েছে। নিত্যদিনই শাসক দল ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে চলছে উত্তপ্ত হুমকি, ধমকি, সতর্কীকরণের পালা। এবার সেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন(West Bengal State Election Commission)। প্রথমত, এবারেও ভোটগ্রহণ করা হবে ব্যালট পেপারে(Ballot Paper)। আর দুই ব্যালট বাক্সে(Ballot Box) থাকবে কিউ আর কোড(Q R Code)। কমিশনের দাবি, এর আগেকার পঞ্চায়েত নির্বাচনে বার বার অভিযোগ উঠেছে, বুথ দখল করে ব্যালট বাক্সে নিজেদের ইচ্ছা মতো ব্যালটে ছাপ দিয়ে তা বাক্সে ফেলে দেওয়ার। অভিযোগ উঠেছে, ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের এবং সেই বাক্স গণনার সময়ে বদলে দেওয়ার। সেই সব অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়েই এবারে ব্যালট বাক্সে কিউ আর কোড লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
রাজ্যে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হয় ইভিএমে। পুরভোটেও ইভিএম ব্যবহৃত হয়। কেননা ওই সব নির্বাচনে ভোটারদের ১টি করেই ভোট দিতে হয়। তাঁরা লাইনে দাঁড়ান, নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে বুথে ঢুকে ভোট দেন এবং বেড়িয়ে যান। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন ভোটার ৩টি করে ভোট দেন। তিনি ভোট দেন গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনের জন্য, পঞ্চায়েত সমিতির আসনের জন্য এবং জেলা পরিষদের আসনের জন্য। অর্থাৎ প্রতিটি বুথে এই হিসাবে ৩টি করে ইভিএম রাখতে হত। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই হিসাবে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার ইভিএম চাই। এত বড় সংখ্যার ইভিএম না রাজ্যে আছে না ভিন রাজ্য থেকে মিলবে। তাই ভোটগ্রহণ করা হবে ব্যালট পেপারেই। আর সেই ব্যালট পেপার ফেলার জন্য প্রতিটি বুথে ৩টি করে আলাদা আলাদা ব্যালট বাক্স থাকবে। আর সেই ব্যালট বাক্সেই থাকবে কিউ আর কোড।
এই বিষ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যালট বাক্সে কারচুপি নিয়ে ভুরিভুরি অভিযোগ আসে। এমনকী, গণনার সময় কিছু বাক্স এদিক- ওদিক করে দেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে। কিউআর কোড থাকলে তাতেই সংশ্লিষ্ট ব্যালট বাক্স সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য গচ্ছিত থাকবে। কারচুপির কোনও চেষ্টা হলে ওই কোড স্ক্যান করে তা ধরে ফেলা যাবে সহজে। এছাড়া বাক্সগুলিতে এবার নতুন করে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। কমিশনের আধিকারিকদের দাবি, ইভিএমের ক্ষেত্রে একটি নম্বর থাকে। তা থেকে জানা যায়, ওই মেশিনে কোন বুথে ভোট হয়েছে। গণনার সময় ইভিএম বদলে গেলে প্রমাণ মেলে ওই নম্বর থেকেই। ব্যালট বাক্সের কিউআর কোড অনেকটা সেই কাজ করবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব ব্যালট বাক্সে কিউআর কোড লাগানো থাকবে। জেলায় জেলায় এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ জেলা সদরেই বাক্সগুলিতে কিউআর কোড লাগানোর কাজ হবে।