নিজস্ব প্রতিনিধি, দার্জিলিং: নিজের অবস্থানে অনড় থেকেই দার্জিলিং লোকসভা আসনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। শনিবার রিটার্নিং আধিকারিকের কাছে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। আর দলের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় বিধায়ক দাঁড়ানোয় যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, দার্জিলিং আসনে বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তাকে ফের প্রার্থী করেছে পদ্ম শিবির। দুই গেরুয়া নেতার লড়াইয়ে উল্লসিত ঘাসফুল শিবির।
গতবার শেষ মুহুর্তে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংয়ের সুপারিশে দার্জিলিং আসনে রাজু বিস্তাকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। গোর্খা সম্প্রদায়ের হওয়ায় এবং উত্তরবঙ্গজুড়ে বয়ে যাওয়া মোদি ঝড়ে অনায়াসে সাংসদ হিসাবে নির্বাচিতও হয়েছিলেন তিনি। যদিও সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে গত পাঁচ বছরে তাঁকে দার্জিলিংয়ে তেমনভাবে দেখা যায়নি বলে রাজু বিস্তার অভিযোগ। বিদায়ী সাংসদকে যাতে ফের লোকসভা ভোটে প্রার্থী না করা হয় সেই দাবি জানিয়েছিলেন বিজেপিরই কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। সেই সঙ্গে এও হুমকি দিয়েছিলেন, ‘ভূমিপুত্র ছাড়া আর কাউকে দল প্রার্থী করলে (পড়ুন রাজু বিস্তা) নির্দল হয়ে দাঁড়াবেন।’
কার্শিয়াংয়ের বিধায়কের ওই হুমকির পরেই অস্বস্তিতে পড়েছিল বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। বিষ্ণুপ্রসাদকে বিদ্রোহের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। উত্তরবঙ্গে আরএসএসের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কার্শিয়াংয়ের পদ্ম বিধায়ককে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে ফল হয়নি। নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন বিষ্ণুপ্রসাদ। এদিন নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে মহাকাল মন্দিরেও পুজো দেন কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক। কেন দলের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিজেপি সংকল্প পত্রে লিখেছিল পাহাড়ের জন্যে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করবে। স্থায়ী সমাধান মানে পৃথক গোর্খাল্যাণ্ড রাজ্য। তা দল করেনি। দল পরিষ্কার করুক স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান মানে আলাদা রাজ্য নয়। আর আগেই তো জানিয়েছিলাম। পাহারবাসীর সমস্যা বুঝতে, দুঃখ-কষ্ট অনুভব করতে হলে স্থানীয় কাউকেই প্রার্থী করতে হবে। না হলে নির্দল হয়ে দাঁড়াব।’ অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক হয়েও নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বিষ্ণুপ্রসাদকে বিঁধেছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা।
