নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বিজেপি নেতারা বার বার অভিযোগ তুলেছিলেন ১০০ দিনের কাজের(100 Days Work) প্রকল্পে এ রাজ্যে বিস্তর অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। সেই অভিযোগের জেরেই গত বছরের ডিসেম্বর থেকে রাজ্যকে ১০০ দিনের কাজের টাকা আর পাঠাচ্ছে না কেন্দ্রে ক্ষমতাশীন মোদি সরকার(Modi Government)। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) বারংবার তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন। কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। উল্টে কেন্দ্র সরকার চলতি বছরে বাংলার জন্য শ্রমদিবসের টার্গেটও বরাদ্দ করেনি। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে বাংলার গরিব মানুষেরা শুধু যা তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাই নয়, আগামী দিনেও রাজ্যের অদক্ষ শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তবে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা পাওয়া নিয়ে এখনও আশা ছাড়েনি নবান্ন। তাই মুখ্যমন্ত্রী নিজে যেমন দিল্লি গিয়ে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন তেমনি রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সফর শেষে তাঁদের রিপোর্ট জমা পড়ার পরে যদি কেন্দ্র সরকার এই প্রকল্পে টাকা দেওয়া শুরু করে তাহলে তখন যাতে সমস্ত নিয়ম মেনে ১০০ দিনের কাজ করা হয় সেই নিয়ে এবার নির্দেশ জারি করে দিল নবান্ন(Nabanna)।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের সব জেলাকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে এবার সতর্ক করে দিল রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। সোমবার এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে প্রতিটি জেলায়। তাতে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, নিয়ম ভাঙলে তার দায় জেলা স্তরের প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টিং এজেন্সিকে নিতে হবে। ফেরত দিতে হবে নিয়ম বহির্ভূতভাবে খরচ হওয়া টাকাও। অর্থাৎ পুরো দায় সংশ্লিষ্ট জেলাকেই নিতে হবে। এই নির্দেশিকায় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, খুব শীঘ্রই গ্রামোন্নয়ন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মানতে চলেছে কেন্দ্র। অর্থাৎ যে টাকা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই টাকা আবারও আসা চালু হয়ে যেতে চলেছে। সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি দফরের পরে পরেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে পারে মোদি সরকার।
নবান্ন থেকে গতকাল জেলায় জেলায় যে নির্দেশিকা গিয়েছে সেখানে এটাও বলে দেওয়া হয়েছে, কোনও উপভোক্তার জবকার্ড কোনও মতেই পঞ্চায়েতের কোনও আধিকারিক বা সদস্যের কাছে থাকতে পারবে না। তথ্য যোগ করার জন্য যদি কারও জবকার্ড চাওয়াও হয় তাহলেও তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে। পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজের জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৭টি রেজিস্টার খাতা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেগুলি রাখতে হবে জবকার্ড, গ্রামসভা, কাজের চাহিদা ও পেমেন্ট, অভিযোগ ও সরঞ্জাম সংক্রান্ত তথ্য প্রভৃতি গুছিয়ে রাখার জন্য। যেখানে কাজ হবে সেখানে প্রকল্পের নাম ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য নির্দিষ্টভাবে লিখে বোর্ড লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।