এই মুহূর্তে




পাহাড়ের গুহায় পূজিত হন লালজলের ‘দেবীদুর্গা’, রোমহর্ষক সেই উৎসবের অজানা কাহিনী




নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামের পর্যটন মানচিত্রে এক উল্লেখযোগ্য নাম ‘লালজল’। কিন্তু দুর্গাপুজোর জনপ্রিয়তায় এখনও এই নাম অশ্রুতই। কিন্তু এর ইতিহাস গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো। জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির(Belpahari) অরণ্যে ঘেরা এক পাথরের পাহাড়। তার মধ্যে এক গুহা। আদিম মানব গুহা বলেই সাধারণভাবে এটি পরিচিত। এই গুহার মানুষের ব্যবহারিক বেশ কিছু জিনিষও উদ্ধার হয়। মনে করা হয় প্রাচীন মানবরাই তা ব্যবহার করত। কথিত আছে, এই গুহায় নাকি মা দুর্গার মূর্তিও আছে। স্থানীয়দের কাছে শোনা যায়, এক সাধু এই গুহায় বসে ধ্যান করতেন।

পাশে তাঁর হিংস্র বাঘও থাকত। তবে তার যথাযথ প্রমাণ নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এই গুহার ইতিহাস জানতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা যখন দুর্গামূর্তির জন্য খননকার্য শুরু করেছিলেন, শোনা কথা, তখন এক বিষধর সাপ তাদের সামনে রুখে দাঁড়ায়। এরপর আর কেউ খনন করার সাহস দেখায়নি। জানা যায়, সেই সাধুই প্রথম এখানে দুর্গাপুজার প্রচলন করেন। পরবর্তীতে তিনি লালজল গ্রামবাসীদের বলে যান যে কোনো অবস্থাতেই যেন পুজো বন্ধ না হয় এই গুহায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একবার পুজো বন্ধ ছিল এই গুহায়, সেই সময় আচমকাই ফের মাওবাদী অশান্তি নেমে আসে গ্রামে। জঙ্গলমহলে(Jangalmahal) প্রথম পুলিশ খুন হয় এই লালজলে। রক্তক্ষয়ী ভয় গ্রাস করতে শুরু করে গোটা গ্রামকে। সে বছর ফের মনে পড়ে সাধুর সতর্কবাণী। তারপর আর লালজলে(Laljal) পুজো বন্ধ করেনি গ্রামবাসীরা।

তাঁদের দাবি, পুজো শুরুর পর থেকেই তাঁদের জীবন স্বচ্ছন্দে রয়েছে। কোথায় এই দেবী দুর্গার অবস্থান? লালজল পাহাড়ের ওপর রয়েছে একটি গুহা। তার ঠিক একধাপ নিচে রয়েছে দুর্গা মন্দির। আর পাহাড়ের কোলে সাধু বাবার জন্য একটি আশ্রমও গড়ে তোলা হয়েছিল। সেখানেই হয় নিত্য পুজো। পুজোর তিন দিন ধুমধাম করেই দেবী বন্দনা চলে। বিশেষ করে নবমীর দিন বাসন্তী পুজোরও আয়োজন হয়। সেদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ভক্তদের আনাগোনা। পাশ্ববর্তী রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসেন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে ওই এলাকায়। গ্রামের সমস্ত পুরুষ ও মহিলারা মাথায় ঘট নিয়ে ঢাকঢোল বাদ্য সহযোগে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। লালজল পাহাড়ের উপর থেকে অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যর সঙ্গে পুজোর আমেজে একাকার হতে ভিড় জমান ভক্তরা।

যদিও লালজলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছরই পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে। পাশাপাশি এই পুজোর সময় অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বেলপাহাড়িতে ব্যাপক পর্যটকের ঢল নামে। বিশেষ করে এই সময় বেলপাহাড়িতে সমস্ত হোমস্টে ও গেস্ট হাউস গুলি পুরোপুরি বুকিং থাকে। মাওবাদীদের আতঙ্কের পর জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরার পর পর্যটন মানচিত্রে অন্য জায়গা পেয়েছে এই ঝাড়গ্রাম। বেলপাহাড়ির এক পর্যটন ব্যবসায়ী বিদ্যাসাগর গোড়াই বলেন, “সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা আছে এখানে, বিশেষ করে পুজোর সময় ফাঁকা থাকে না সমস্ত বুকিং হয়ে যায়”। সব মিলিয়ে পূজোর মৌসুমে ছুটি কাটাতে আপনাদেরও ছুটে আসতেই হবে জঙ্গলমহলের বেলপাহাড়িতে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শক্তিগড়ে পথ দুর্ঘটনার বলি চিকিৎসকের স্ত্রী ও মেয়ে

ছেলে-মেয়েকে নিয়ে প্যাণ্ডেল হপিং শুভশ্রীর, কাজের ফাঁকে পরিবারকে আগলে রাখছেন রাজ

সাগরে চোখ রাঙাচ্ছে গভীর নিম্মচাপ, ভাসবে গোটা বাংলা

দশভুজা রূপে নন, দেবী এখানে পুজিতা হন ‘দুই’ হাতেই

শুরু হয়ে গিয়েছে নবপত্রিকা স্নান, জানুন কলাবউ আসলে কে ?

অনশন আন্দোলনের জেরে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের একাংশও, ট্যুইট কুণালেরও

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর