24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 4:18 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: মায়ের পুজো, অথচ মেয়েরাই সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না! ৬০০ বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গা পুজোয়। মায়ের পুজোতে মহিলারা শতহস্ত দূরে থাকেন। আজও এই প্রথা ভাঙার সাহস নেই কারুর। এমনকী অঞ্জলি কিংবা মায়ের প্রসাদ খাওয়া বা বেলপাতার ছোঁয়া বা শান্তির জল নেওয়ারও কোনো অধিকার নেই মেয়েদের। কিন্তু কেন? এই নিয়মের পেছনের কারণ কী?
রাজপরিবার সূত্র অনুযায়ী, বর্ধমানরাজের নায়েব ছিলেন উদয়নারায়ণ ঘোষ। তিনি একবার রাজার অনুমতি নিয়ে মেদিনীপুর জেলায় শিকার করতে গিয়েছিলেন। শিকার করে ফেরার পথে হঠাৎ দেখেন একটি বক তাড়া করছে একটি বাজপাখিকে। এমন অভিনব দৃশ্য দেখে বাড়ি ফিরে সেই রাতেই তিনি স্বপ্ন দেখেন, ওই জঙ্গলেই রয়েছেন মা দুর্গার অষ্টধাতুর মূর্তি। আর মেয়ের স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী সেই মূর্তি তিনি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
ওই জঙ্গল সাফ করে তৈরি করেন বাড়ি। সে বছরই তিনি ওই অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তির পুজো শুরু করেন। পরবর্তীকালে উদয়নারায়ণ ঘোষই দুর্গা পূজার যাবতীয় বিধিনিষেধ চালু করেন। তাঁর প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী এখন মা পূজিত হচ্ছেন। এমনকি মা এখানে একাই পূজিত হন, তাঁর সঙ্গে থাকেন না তাঁর ছেলে-মেয়েরাও। বৃহৎনন্দীকিশোর মতে দুর্গার পুজো হয় রাজবাড়িতে। মায়ের নৈবেদ্য, চালের মোয়া সবই রাজবাড়ির মহিলারা তৈরি করলেও কিন্তু পুজোয় তাঁরা মায়ের পুজোয় উপস্থিত হতে পারেন না। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত জ্বলে হোমগ্নি। মায়ের পুষ্পাঞ্জলিও দিতে পারেন না তাঁরা। এটাই রাজবাড়ির প্রথা। রাজপ্রথা মেনেই রাজবাড়ির মায়ের বিসর্জন হয় না, নিরঞ্জন হয়।