নিজস্ব প্রতিনিধি: বলিউডের কিংবদন্তি পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনসালি। বলিউডের অন্যান্য পরিচালকদের তুলনায় বরাবরই তাঁর অভিনব চিন্তাভাবনা দর্শকদের আকর্ষণ করেছে। তাঁর নির্মিত, দেবদাস থেকে গাঙুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি, রাম লীলা, হাম দিল দে চুকে সানাম, বাজিরাও মাস্তানি, পদ্মাবত-সহ একাধিক ছবি বলিউডে নয়া ইতিহাস রচনা করেছে। তাঁর নির্মিত প্রত্যেকটি ছবির সেট একটু অন্য কায়দায় বানানো। বর্তমানে সঞ্জয় লীলা বনসালির আসন্ন ছবি ‘হীরামাণ্ডি’-র অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই। যদিও ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে নয়, নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে আগামী মে-তে। ছবিটি পাকিস্তানের হীরামাণ্ডির কাহিনীতে মোড়া। যেটি স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে দেশের মূল পতিতা পল্লী নামে পরিচিত ছিল।
হীরামাণ্ডিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন, মনীষা কৈরালা, রিচা চাড্ডা, সোনাক্ষী সিনহা, অদিতি রাও হায়দারি-সহ একাধিক তারকা। যাই হোক, ইতিমধ্যেই ছবির টিজার, ট্রেলার সবটাই মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। ছবির সেটও দেখেছেন সবাই। কিন্তু জানেন কী, হীরামাণ্ডির পুরো সেটটা বানাতে সঞ্জয় লীলা বনসালির চিন্তাভাবনা কী ছিল? দর্শকদের মনে প্রতিবারই এই প্রশ্নটি থাকে যে, তিনি প্রতিবার কীভাবে প্রোডাকশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে নিজেকেই ছাড়িয়ে যান? ছবিটি বেশিরভাগই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের চারপাশে আবর্তিত। হীরামান্ডির রেড-লাইট এলাকায় বসবাসকারী তাওয়াইফদের (সভ্যতাদের) জীবনকে ঘিরে তৈরি ছবিটি। স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে লাহোর।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ছবির সেট ডিজাইনার প্রোডাকশন বলেছেন, বানসালি তার আসন্ন আট পর্বের সিরিজের জন্য তিন একর সেট আপ করেছেন। এটি বনসালির এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সেট। ৭ মাস ধরে ৭০০ জন কারিগরের সান্নিধ্যে গঠিত হয়েছে এই সেট। যেখানে রয়েছে প্রায় ৬০,০০০ কাঠের তক্তা। ধাতব ফ্রেমের তৈরি রানী মল্লিকাজানের (মনিষা কৈরালা) শাহী মহল স্থাপনের জন্য সাত মাস ধরে কাজ করেছে কারিগররা, যেটি ছিল হীরামান্ডির সবচেয়ে শক্তিশালী পতিতালয়। আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্ট বলেছে, সেটটিতে রয়েছে খোয়াবগাহ (কোয়ার্টার), একটি চমত্কার সাদা মসজিদ, একটি বিশাল উঠান, একটি নাচের হল, জলের ফোয়ারা, একটি ঔপনিবেশিক চেহারার কক্ষ, রাস্তা, দোকান, অনেক ছোট ছোট কোঠা, এবং একটি হাম্মাম রুম। সেই সময়ের শিল্প, কারুশিল্প এবং টেক্সটাইল। এছাড়াও রয়েছে মুঘল মিনিয়েচার পেইন্টিং, ফ্রেস্কো, ব্রিটিশ অফিসারদের ঔপনিবেশিক প্রতিকৃতি, জানালার ফ্রেমে ফিলিগ্রির কাজ, মেঝেতে এনামেল খোদাই করা, ছোট ছোট কাঠের দরজা এবং এমনকি ঝাড়বাতি সবই বানসালির তত্ত্বাবধানে হস্তনির্মিত ছিল।