নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেন বাঙালির ইমোশন। বাংলা সিনেমার অনন্য কিংবদন্তি। যাঁদের কোনও ব্যতিক্রম হয় না। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সেই ক্ষত কখনও পূরণ হওয়ার নয়। এককালে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণাকে উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেনের পর্যায়ে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু তা দর্শক কখনই মনে করে না। উত্তম সুচিত্রা জুটি বাংলার অত্যন্ত গর্বের তারকা জুটি। মহানায়ক ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ চলচ্চিত্রের সময়েই মারা গিয়েছেন। কিন্তু মহানায়কের মৃত্যুর পরেই নিজেকে আড়াল করে নেন সুচিত্রা সেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্তও তাঁকে কেউ ঘরের বাইরে দেখেননি। এমনকী ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কার নেওয়ার জন্যে দিল্লিতে যান নি। কারণ এই পুরস্কার নেওয়ার জন্যে সশরীরে উপস্থিত হতে হয়। যেহেতু তিনি নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন দীর্ঘদিন তাই দিল্লিতে তিনি যেতে রাজি হননি। একপ্রকার প্রত্যাখ্যান করেন এই পুরস্কার। বাঙালি মননে উত্তম কুমার যদি আবেগের নাম হয়, তাহলে সুচিত্রা সেন রোম্যান্টিসিজমের প্রতীক। মহানায়কের মহা নায়িকা।
যার হাত ধরে বলা যায়, “এই পথ যদি না শেষ হয়…”। গত ৬ এপ্রিল ছিল সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকী। বর্তমানে চারিদিকে ওটিটি র রমরমা। কারণ সিনেমাহলে খুব কম মানুষই পা রাখেন, সময়ের অভাবে যাওয়া হয়না। তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই যদি সিনেমা, সিরিয়াল দেখার সুযোগ থাকে, তাহলে তো কোনও কথাই নেই! আর ওয়েব প্লাটফর্ম গুলিতে একের পর এক নতুন ওয়েবসিরিজের রিলিজ দর্শকদের আরও ওয়েব দুনিয়ায় আকর্ষণ করছে। যাই হোক, উত্তম-সুচিত্রার আমলে ওয়েব প্লাটফর্ম তো দূরের কথা, ইন্টারনেটের বিষয়েই কেউ কিছু জানতেন না। তাই এবার সুচিত্রা সেনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে নবরূপে বাঙালির কাছে মহানায়িকাকে হাজির করছে ‘ক্লিক’। ৬ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখানো হবে সুচিত্রার একগুচ্ছ সুপারহিট ছবি।
যার মধ্যে থাকবে, ‘ইন্দ্রাণী’, ‘একটি রাত’, ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘দীপ জ্বেলে যাই’, ‘ওরা থাকে ওধারে’, ‘পথে হল দেরি’, ‘সবার উপরে’, ‘সাগরিকা’, ‘হার মানা হার’, ‘বিপাশা’, ‘শিল্পী’, ‘সাড়ে ৭৪’, ‘জীবনতৃষা’, ‘নবরাগ’, ‘সদানন্দের মেলা’ এবং ‘ঢুলি’। ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়’ ছবি দিয়ে রুপোলি পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন সুচিত্রা সেন। এরপর থেকেই তাঁর বর্ণাঢ্য কেরিয়ার, সফলতা, আজ তাঁকে রমা থেকে সুচিত্রা সেন বানিয়েছে। দর্শকদের নজরে তিন আজও মহানায়িকা। মুলত ১৯৫৩ সালের ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ থেকেই তিনি রাতারাতি বাঙালির নয়নের মণি হয়ে ওঠেন। আর এই ছবিতেই তিনি প্রথমবার উত্তম কুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন। ব্যস, রাতারাতি হয়ে যান তাঁরা হিট জুটি।