নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিবর্তনের পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) রাজ্যবাসীর আর্থিক উন্নতির জন্য সচেষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বাংলার দুঃস্থ, মেধাবী পড়ুয়াদের(Students) উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাতে কোনও বাধা না আসে, তার জন্যও ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। তারই নির্যাস স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড(Student Credit Card) ও স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ(Swami Vivekananda Merit cum Means Scholarship। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে যেমন কোনও পড়ুয়া উচ্চশিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারে তেমনি স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপের মাধ্যমে কোনও পড়ুয়া প্রতি মাসে ১ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান পেতে পারে। এই প্রকল্পেই এবার ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে ৮ লক্ষের বেশি পড়ুয়া পেয়ে গেল স্কলারশিপের টাকা। বাংলার দুঃস্থ অথচ মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাতে কোনও বাধা না আসে, তার জন্যই নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপের টাকা নিয়মিত পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২০২১-’২২ সালে ৮ লক্ষের বেশি পড়ুয়াকে স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপের টাকা প্রদান করা হয়েছে। আর একটিও আবেদন পড়ে নেই। প্রত্যেক আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে বলে রাজ্য শিক্ষা দফতর(Education Department) সূত্রে জানা গিয়েছে। এই আর্থিক বছরে এই খাতে রাজ্য প্রায় ১০০০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। আবেদনকারীদের দু’টি ভাগে ভাগ করে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে। একদম নতুন আবেদনকারী এবং প্রাপক হিসেবে পুনর্নবীকরণ। নতুন আবেদনকারীর সংখ্যা ৭ লক্ষেরও বেশি। পুনর্নবীকরণ করিয়েছেন ১ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি পড়ুয়া। এদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে সব থেকে বেশি নতুন আবেদনকারীরা এই টাকা পেয়েছেন। এছাড়াও দুই মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকেও ভাল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছে। এদিকে স্কলারশিপ পুনর্নবীকরণ করিয়ে টাকা পাওয়ার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। সেখানে স্কলারশিপ পুনর্নবীকরণ করিয়েছে ১৬ হাজার পড়ুয়া। তারপ্রেই আছে উত্তর ২৪ পরগনা, সেখানে এই সংখ্যা ১৪ হাজার।
রাজ্যের শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ আছে অর্থ যাতে কোনও পড়ুয়ার শিক্ষায় অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়, তার জন্য স্কলারশিপের টাকা যেন প্রতি মাসে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। সেই নির্দেশ মতোই স্কলারশিপের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে। কেননা বাংলার মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার স্বার্থেই এই স্কলারশিপ চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে পিএইচডি স্তর পর্যন্ত এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়। এর জন্য পরিবারের বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ বা তার কম হতে হবে। এতদিন এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে গেলে শেষ পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু এবারে তা কমিয়ে ৬০ শতাংশ করা হয়। তাতেই আবেদনের সংখ্যা এক ধাক্কায় এবারে অনেকটা বেড়ে যায়। গত বছর নভেম্বর থেকে এই স্কলারশিপ পোর্টাল চালু করা হয়েছিল। সেখানেই বেশি আবেদন জমা পড়ে। তার জেরে চলতি আর্থিক বছরের বাজেটে এই স্কলারশিপের জন্য রাজ্য সরকার বাড়তি টাকাও বরাদ্দ করে।