নিজস্ব প্রতিনিধিঃ চলতি সপ্তাহেই হয়ে গেল অস্টিওপোরোসিস দিবস। এই রোগ বা সমস্যার সঙ্গে আমরা সকলেই ভীষণভাবে এখন পরিচিত। শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে সহজেই হাড় ভেঙে যাওয়া বা হাড়ে চিড় ধরে যাওয়ার মত বহু সমস্যা দেখা যায়। অন্যদিকে ত্রিশ বছর বয়সের সঙ্গে সঙ্গেই মহিলাদের হাড়ের নানা সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শুধুই হাড় নয় দাঁতের গঠন সঠিক রাখতেও শরীরে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্যান্য উপাদানের মত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার থাকাটাও জরুরি। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন আছে। প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস থেকে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম পেতে কি ধরনের ডায়েট ফলো করবেন জেনে নিন।
দুধঃ ক্যালসিয়ামের এক অন্যতম উৎস হল দুধ। এক কাপ দুধে ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় দুধে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তবে যাদের দুধ হজম করতে নান সমস্যা হয় তাঁরা নারকেলের দুধ, সোয়ামিল্ক বা আমন্ড মিল্ক খেতে পারেন।
দইঃ যাদের দুধ খেলে হজমের সমস্যা হয় তাঁরা দইও খেতে পারেন। ক্যালসিয়ামের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল দই। এক কাপ ফুল ফ্যাট দইতে মেলে প্রায় ২৯০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। শুধু তাই নয় দইতে থাকা ল্যাক্টোব্যাসিলাস হজমে সাহায্য করে।
সবুজ শাকসব্জিঃ পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, নটে শাক হল ক্যালসিয়ামের খুব ভালো এক উৎস। বিশেষত পালংশাক। ক্যালসিয়ামে ঠাসা পালংশাক হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে। শুধু তাই নয় ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি পালংশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন এ ও ফাইবার।
শুকনো ফল ও বাদামঃ বাদামে থাকা ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য উপাদান হাড়ের গঠনে বিশেষ ভাবে উপকারি। আপ্রিকট, খেজুর ও বাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম মেলে যা আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
ডালঃ সোয়াবিন দানা, রাজমা ও নানা প্রকারের ডালে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম মেলে।
ফলঃ নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ পেঁপেকে ক্যালসিয়ামের খনি বলা যেতে পারে। মাঝে মাঝে প্রাতরাশে পাকা পেঁপে খেতে পারেন। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে আপনি প্রায় ২০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাবেন। এছাড়াও ক্যালসিয়ামের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল কমলালেবু। ভিটামিন সি-এর পাশাপাশি এতে প্রচুর পরিমাণে থাকা ভিটামিন ডি হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
আমিষ উৎসঃ আমাদের হাড় মজবুত রাখতে শরীরে অমেগা থ্রি র এক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। তাই অমেগা থ্রি সমৃদ্ধ নানা সামুদ্রিক মাছ এর অন্যতম উৎস। যেমন- স্যামন, টুনাফিশ। এছাড়াও মাংস ও ডিম ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ থাকে। যা শরীরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামের জোগান দিতে পারে।
তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা কখনও শরীরের পক্ষে হানিকারকও হয়ে ওঠে বটে। এর ফলে শরীরে কনস্টিপেশান বা কিডনিতে স্টোন হওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই যে কোনও খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই পুষ্টিবিদের থেকে সঠিক পরামর্শ নেবেন।