নিজস্ব প্রতিনিধি,চন্দননগর: চন্দননগরের দরিদ্র ভ্যান চালকের ছেলে নবম শ্রেণির পড়ুয়া সৌভিক শেঠ। ‘স্মার্ট শু’ (Smart Shooe)বানিয়ে চমক দিয়েছে চন্দননগরের সেই বালক। নবম শ্রেণীর ওই ছাত্র বিদেশে ডাক পেয়েছে ইতিমধ্যে। তার আবিষ্কার পায়ে পায়েই হাঁটতে হাঁটতে চার্জ হবে মোবাইল ফোন।খুদে গবেষকের টেবিলে ছড়ানো নানারকম যন্ত্রপাতি ৷ তার মধ্যে রয়েছে জুতো ! হঠাৎ জুতো নিয়ে কী করছে নবম শ্রেণির ছাত্র সৌভিক শেঠ ? আসলে, সে বানিয়ে ফেলেছে আশ্চর্য জুতো, যার নাম’ স্মার্ট শু’ ৷
অবাক করার মতোই তার এই অভিনব জুতো ৷ এই জুতো পরে হাঁটতে গেলেই ম্যাজিক(Magic) ৷ পায়ের চাপে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ ৷ আর সেই বিদ্যুৎ দিয়ে মোবাইলে চার্জ দেওয়া যাবে দিব্যি, করা যাবে জিপিএস ট্র্যাকিংও ৷জুতোর মধ্যে লুকিয়ে থাকবে ক্যামেরা, যা দিয়ে পিছু নেওয়া ব্যক্তির চেহারা ধরা পড়বে ৷ এমন একটি স্মার্ট শু তৈরি করে ফেলেছে চন্দননগরের খুঁদে বিজ্ঞানী সৌভিক ৷সে এখন কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের নবম শ্রেণির প্রথম হওয়া ছাত্র ৷ পড়াশোনার সঙ্গে বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি করা তার কাছে নেশার মতো ৷ এই গবেষণার প্রথম দিকে সৌভিক ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে কলিংবেল তৈরি করেছিল ৷ বর্জ্য পদার্থ জ্বালিয়ে কীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, তার একটি ডেমো প্রজেক্টও (Demo Project)করে সে ৷এখন সে মগ্ন তার ‘স্মার্ট শু’ নিয়ে ৷ স্মার্ট ফোন, ঘড়ি হাতে এসেছে, সৌভিকের প্রমাণিত জুতো পরে হাঁটলে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে ৷ আর তা দিয়ে মোবাইল, পাওয়ার ব্যাঙ্ক-সহ নানা ধরনের গ্যাজেটে চার্জ দেওয়া যাবে ৷
এছাড়া এই জুতোয় লাগানো থাকবে গোপন ক্যামেরা ও নেভিগেশন সিস্টেম ৷ জিপিএস ট্র্যাকিং থাকায় এই জুতো শিশুদের নিরাপত্তা দেবে ৷ ক্যামেরায় গোপনে রেকর্ড করাও সম্ভব হবে ৷সৌভিক জানিয়েছে, এক কিলোমিটার হাঁটলেই ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ হয়ে যাবে ৷ আর সেখান থেকে একটি মোবাইল চার্জ বা অন্য কোন গ্যাজেট চার্জ করা যাবে।চন্দননগরের(Chandannagar) বারাসাত দে পাড়ায় বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সৌভিকের এই স্বপ্নপূরণের পথে বাধা অর্থ ৷ বাবা স্বরূপ শেঠ একজন হতো দরিদ্র জুটমিল শ্রমিক ছিলেন ৷এখন কারখানা বন্ধ।তাই উনি ভ্যান চালান এখন। খরচসাপেক্ষ এই স্মার্ট শু তৈরি হবে কী করে ? তাই কোনও জুতো কোম্পানি বা সংস্থা তার এই কাজে পাশে এসে দাঁড়াক, চায় সৌভিক ৷ তাহলে এই স্মার্ট শু তৈরিতে খরচের টাকার জোগাড় হবে ৷
পঞ্চম শ্রেণি থেকেই বৈজ্ঞানিক সব কাজকর্মে আগ্রহ তার ৷ স্কুলের শিক্ষক থেকে প্রতিবেশী এক দাদা এই কাজে সাহায্য করে সৌভিককে ৷ বাড়িতে আর্থিক পরিস্থিতি তেমন একেবারই ভালো না। অদম্য ইচ্ছেশক্তিতে কাজ করে যাচ্ছে খুদে আবিষ্কারক ৷ ভবিষ্যতে আইটিআইতে পড়াশোনার উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে তার ৷এই মুহূর্তে বিদেশের এক গবেষণা কেন্দ্র তাকে ডেকেছে।জাপানের jaxa গবেষণা কেন্দ্র তাকে ডেকে পাঠিয়েছে।কিন্তু এখন সেই অর্থই বাধা সবকিছুর মধ্যে।