নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রায় দু’দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিতে জলস্ফীতি। এবার তিস্তার উভয় পাড়েই জারি হল লাল সতর্কতা। নদীর জল ঢুকে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রামে। বাড়িতে বুক-সমান জল। ফলে বাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন প্রত্যেকে। বানভাসি পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে এলাকায় এলাকায় রাতভর ঘুরলেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার।
পাহাড়ে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে তিস্তায় আরও জলস্ফীতি। তিস্তা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় ছাড়া হয়েছে ৪ হাজার ৫০১ কিউসেক জল। যার ফলে এবার তিস্তার অসংরক্ষিত এবং সংরক্ষিত উভয় এলাকায় জারি হল লাল সতর্কতা। পাশাপাশি ভুটান পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টির জেরে জলঢাকা নদীতেও জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। আর এর জেরে জলঢাকা নদীর উভয় পারে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
তিস্তা নদীর জল জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন অসংরক্ষিত এলাকার সারদাপল্লী, সুকান্তনগরে ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। এই সমস্ত এলাকার বাসিন্দারা নিরাপদ স্থানে সরে এসেছেন। কেউ আবার নদী বাঁধের ওপর পলিথিন টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। জেলার সবকয়টি ব্লক তিস্তা কিংবা জলঢাকার জলে প্লাবিত হয়েছে। সদর, রাজগঞ্জ,ময়নাগুড়ি, ক্রান্তি প্রভৃতি ব্লকের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তিস্তা নদীর জল। চাপাডাঙা, নন্দনপুর, পাতকাটা-সহ বেশ কিছু নিচু এলাকার অন্তত দশ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
পরিস্থিতির সরজমিনে খতিয়ে দেখতে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার সারারাত ধরে জেলার বিভিন্ন জায়গায় হাজির হয়েছিলেন। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছেন, মূলত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় যারা রয়েছেন তাদের উদ্ধার কাজ রাত থেকেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের রাখার জন্য জেলার সমস্ত স্কুল কিংবা কলেজগুলিকে কাজে লাগানো হবে। নদীর চর এলাকায় সুকান্তনগর, সারদাপল্লী, নন্দনপুর বোয়ালমারি এলাকায় অন্তত হাজার দশেক মানুষকে নিরাপদে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। উদ্ধারকাজে লাগানো হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। পাশাপাশি দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও পানীয়জলের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।