নিজস্ব প্রতিবেদক: এপার বাংলার বাসিন্দা রোহতন বিবি। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন কাঁটাতারের ওপারে বাংলাদেশে। কিন্তু রোহতনের ইচ্ছে ছিল তাঁর মৃত্যুর পর যেন হাজির থাকেন দুই মেয়ে। আর মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়েই সীমান্তে মাকে দেখতে হাজির হন দুই মেয়ে। তাঁদের সহযোগিতা করেছে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।
রোহতন বিবি নদিয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম মাটিয়ারির বাসিন্দা। দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগছিলেন যকৃতের সংক্রমণে। রবিবার দুপুরে মৃত্যু হয় তাঁর। তিন সন্তানের জননী রোহতন । তিন জনের মধ্যে কেবল ছেলে শুকুর মণ্ডল মৃত্যুর সময় কাছে ছিলেন। রবিবার রোহতনের মৃত্যুর পর পদ্মাপারের ওপারে তাঁর দুই কন্যাকে খবর দেওয়া হয়। মায়ের মুখ শেষ দেখা দেখতে আসার ইচ্ছে থাকলেও দুই কন্যা কারোর কাছে নেই পাসপোর্ট। ফলে সীমান্ত পেরোতে বিপাকে পড়েন তাঁরা। অবশেষে দাদা শুকুর মন্ডলের চেষ্টায় এবং ভারত বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতায় মাকে শেষবারের মতো দেখতে সক্ষম হন দুই মেয়ে।
মায়ের মৃত্যুর পর ৫৪ নম্বর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর দ্বারস্থ হন শুকুর মন্ডল। দুই বোনকে সীমান্তে অনুমতি দেওয়ার জন্য সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে কাতর আবেদন জানান তিনি। সব কথা খুলে বলেন বিএসএফকে। কিন্তু বিএসএফের তরফে অনুমোদন দেওয়া হলেও এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অনুমোদনও প্রয়োজন। বিএসএফের তরফ অনুমতি মেলার পর বাংলাদেশের সীমান্ত বাহিনী বিজিবি – এর তরফেও মেলে অনুমতি। এরপর সীমান্তে চোখের জলে জিরো লাইনে মাকে শেষ দেখা দেখলেন দুই কন্যা। এক হৃদয়স্পর্শী দৃশ্যের সাক্ষী থাকল দুই রাষ্ট্রের সীমান্তে মোতায়েন থাকা অস্ত্রধারী জওয়ানরা। এই ঘটনা নিয়ে বিএসএফ-এর দক্ষিণবঙ্গ বিভাগের জনসংযোগ আধিকারিক সুরজিৎ সিংহ গুলেরিয়ার বলেন, ‘‘বিএসএফ সব সময় সামাজিক এবং মানবিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয়। এটা তারই নজির।’’ মাকে দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিএসএফ এবং বিজিবিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন রোহতন বিবির বড় মেয়ে রোজিনা বিবি।