এই মুহূর্তে




‘জ্যান্ত আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি’, বাড়ি ছেড়ে পালালেন কুমিল্লার ধর্ষিতা হিন্দু তরুণী




নিজস্ব প্রতিনিধি, কুমিল্লা: পৈশাচিক ধর্ষণের শিকার হয়েও নিষ্কৃতি নেই। ধর্ষকের বিরদ্ধে মামলা তোলার জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দলের নেতারা। মামলা না তুলে নিলে পরিবারশুদ্ধ জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছেন বিএনপির দাপুটে নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ঘনিষ্ঠ নেতারা। আর এর পরেই প্রাণ বাঁচাতে সপরিবারে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন কুমিল্লার ধর্ষিতা হিন্দু তরুণী। গত সোমবারই তিনি দুই সন্তান ও বাবাকে নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। মুরাদনগরের ওসি জাহেদুর রহমান স্বীকার করেছেন, ‘প্রাণ বাঁচাতেই নির্যাতিতা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গিয়েছেন।’ যদিও হুমকিদাতা তথা বিএনপির প্রাক্তন সাংসদ কায়কোবাদের দাবি, ‘কেউ হুমকি দেয়নি। স্থানীয় থানার ওসি ও কুমিল্লার পুলিশ সুপার আওয়ামী লীগ নেতাদের কথামতো নির্যাতিতাকে জোর করে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছেন।’

বাপের বাড়ি বেড়াতে এসে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় বিএনপি ন্বেতা ফজর আলির ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ২১ বছরের হিন্দু তরুণী। এমনকি বিবস্ত্র আবস্থায় তাঁর ভিডিও-সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করে দেয় ধর্ষকের সঙ্গীরা। সমাজমাধ্যমে ওই ভিডিও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হতেই দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। সমালচনার মুখে গত রবিবার (২৯ জুন) রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদের এক হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয় ধর্ষক ফজর আলীকে। আর ভিডিও ভাইরাল করার জন্য আরও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই ধর্ষণ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নির্যাতিতা তরুণী ও তার বাবার উপরে চাপ সৃষ্টি করেন মুরাদনগর উপজেলার বিএনপি আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। প্রথমে চাপের মুখে মামলা তোলার কথা জানালেও পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের আশ্বাসে মামলা প্রত্যাহার না করার সিদ্ধান্ত নেন নির্যাতিতা। আর তাতেই চটে লাল হয়ে যান বিএনপি নেতারা। গত সোমবার সকালে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতারা হুমকি দেন, ‘ধর্ষণ মামলা না তুললে পরিবারকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হবে।’ ওই হুমকির বিষয়টি স্থানীয় এক শিক্ষককে জানান নির্যাতিতা। তিনিই জেলা পুলিশের শীর্ষ মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পরেই নিরাপত্তার কারণে নির্যাতিতাকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই পরামর্শ মেনেই তড়িঘড়ি বাড়ি ছাড়েন নির্তাতিতা তরুণি ও তার পরিবারের সদস্যরা।

অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) নির্যাতিতার বাড়ি গিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে এসেছেন বিএনপির প্রাক্তন সাংসদ মোফাজ্জ্জল হোসেন কায়কোবাদ। হুঙ্কার ছুড়ে তিনি বলেন, ‘গ্রাম ছেড়েও ওই নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সদস্যরা বাঁচতে পারবে না।  বাংলাদেশে এখন বিএনপির রাজত্ব চলছে। ফলে নির্যাতিতাকে খুঁজে বের করা হবে। মামলা না তুললে চরম শিক্ষা দেওয়া হবে।’ নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য মুরাদনগর থানার ওসি জাহেদুর রহমানকেও হুমকি দিয়েছেন কায়কোবাদ।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

‘ঝাঁঝরা করে দাও’, গোপালগঞ্জে নিরস্ত্র জনতার উপরে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৩৫ বছর বাদে নিরস্ত্র জনতার উপরে গুলি চালিয়ে বাংলাদেশে খলনায়ক সেনাপ্রধান ওয়াকার

রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থমথমে গোপালগঞ্জ, রাতভর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তাণ্ডব সেনাবাহিনীর

জর্জ ফ্লয়েডের ছায়া বঙ্গবন্ধুর গোপালগঞ্জে, বুট দিয়ে পিষে আওয়ামী লীগ কর্মীকে খুন করল সেনা

রক্তে ভাসল শেখ মুজিবের গোপালগঞ্জ, সেনাবাহিনীর নির্বিচারে গুলিতে নিহত হিন্দু ছাত্র-সহ ৫ আওয়ামী লীগ কর্মী

শেখ মুজিবের কবর ভাঙতে গিয়ে জনতার তাড়া খেয়ে পালাল ইউনূসের পোষ্য পুত্ররা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ