27ºc, Haze
Wednesday, 29th March, 2023 12:36 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ থেকে কয়েক শতাব্দী আগের কথা। কথিত আছে, নিমতলি পাড়া ঘাটে ভেসে আসে একটি পাথরচক্র। স্বপ্ন দেশের পরে এক বৃদ্ধা সেই পাথর চক্র লাভ করে নিজ গৃহে নিয়ে গিয়ে দেবী চণ্ডী জ্ঞানে পুজো শুরু করেছিলেন। আনুমানিক ১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে মহানন্দা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে, বর্তমানে মালদা শহরের কুতুবপুর এলাকায় দেবীর আরাধনা শুরু হয়েছিল।
পরবর্তীকালে এই পুজোর দায়ভার নিয়েছিলেন পুরাতন মালদার তৎকালীন জমিদার গিরজা বাবু এবং সাড়ম্বরে তিনি দুর্গা পুজো শুরু করেন। শেষ বয়সে তিনি ওই পাথরচক্রটি কংস বণিক সম্প্রদায়ের হাতে তুলে দেন। ইংরেজি ১৮৬৮ সালে কংস বণিক সম্প্রদায় তাদের পূর্বপুরুষের দান করা জমিতে দুর্গা মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।
১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে দুর্গামন্দির ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে মন্দিরের সংস্কার করা হয়। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরের জন্যই শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নাম দুর্গা বাড়ি মোড়।
এখনও বংশ পরম্পরায় দেবী আরাধনায় মেতে ওঠেন আদি কংস বণিক সম্প্রদায়ের পরিবারগুলি। প্রতিবছর ঘটভরা থেকে শুরু করে পুষ্পাঞ্জলি, সন্ধি পুজো, সন্ধ্যা আরতি, বিসর্জন সবই হয় পুরনো প্রথা মেনেই।
দূরদুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন পুজোর (DURGA PUJA) টানে, জাঁকজমকপূর্ণ আধুনিক যুগেও স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে দুর্গা বাড়ি। আজও পুজোতে সপ্তমীর সকালে ও দশমীর বিকেলে সুসজ্জিত শোভাযাত্রা করে দেবীকে ঘাড়ে করে নিয়ে যাওয়া হয় এক ঘাটে এবং সেখান থেকে নৌকা করে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য ঘাটে। বিসর্জনের আগে হয় নৌকা ভ্রমণ।
সময়ের স্রোতে অনেক কিছু বদলালেও বদলায়নি এই দুর্গা বাড়ির পরম্পরা। তাই আজও মন্দির প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয় দেবী প্রতিমা। আরাধনা করা হয় সাবেকি প্রতিমার।