(কাদম্বরী দেবী আফিম খেয়েছিলেন ১৮৮৪ সালের ১৯ এপ্রিল। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ২১ এপ্রিল। জানা যায়, বিশু নামের এক শাড়ি বিক্রেতাকে দিয়ে আফিম আনিয়েছিলেন তিনি।)
রাত। রবি (Rabindranath Tagore) ঠিক এই সময় তার ছাদের নন্দন কাননে পায়চারি করছে। ধীর ভাবে কিন্তু কী অস্থির মন। আদরের বৌঠান (Kadambari Devi)ঢলে পড়েছে কাল ভোরে। তার প্রথম জীবনের প্রথম পাঠিকা, সমালোচক। খুনসুটি নেই আর। একটা দিন পেরিয়ে গেল। কী শূণ্যতা! বৌঠান এই শূণ্যতা নিয়ে বেঁচে ছিল কতকাল! স্যুইসাইড নোট পুড়ে গেছে। টাকার থলিতে মুখ বন্ধ করেছে সংবাদপত্র। একটা চিঠি লুকিয়ে রাখা জোব্বায়। কেউ জানবে না কোনওদিন। জ্যোতি দা কেন করল এমন? আমি বা কেন বন্ধুতা থেকে পিছু হটলাম। যে যাই বলুক আমাদের নিখাদ আন্তরিকতা বই কিছু তো ছিল না। কত কী শুনতে হয়েছে তাই।
ছাদে গুটি গুটি পায়ে এসে দাঁড়াল মৃণালিনী ( Mrinalini Devi)। রবির ছুটি। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল কবিকে। কবি ফিরে মুখ গুঁজল ছুটির বুকে। গুমোট কান্না বেরিয়ে এল চোখ ছাপিয়ে, দু’ গাল বেয়ে। স্থির মৃণাল। কষ্ট হল, অভিমান কী তারও কম! সব ভোলা যাক।
জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ির চাকর মহলে গুঞ্জন উঠল, ছোট বউ জিতে গেল, নতুন বউ বেঁচে গেল। ছোট ঠাকুর তো মনের মানুষ নতুন আভিজাত্যের।
– নিসর্গ নির্যাস মাহাতো