এই মুহূর্তে

ছোট থেকেই সমাজের বেড়াজাল ভাঙতেন ‘অপয়া’ রোশেনারা, হয়ে উঠলেন দুর্গতিনাশিনী

নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি রোশেনারা খান। বাড়ি মেদিনীপুরে। সমাজে বিশেষ অবদানের জন্য এই বছর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়েছে ‘বিদ্যাসাগর’ পুরস্কারে। ছোট থেকেই তাঁকে শুনতে হয়েছে ‘অপয়া’। ওই ছোট থেকেই ধর্মের বেড়াজাল ভাঙতে শিখেছিলেন রোশেনারা। বিয়ে হয়েছিল মাত্র ১৩ বছর বয়সে। তাঁর স্বামী ছিলেন ধলহরা হাইস্কুলের শিক্ষক শাজাহান খান। পরবর্তীকালে শাজাহান হয়েছিলেন ডব্লুবিসিএস আধিকারিক, ব্যাঙ্ক কর্মী। আসলে চাকরি বদলের নেশা ছিল তাঁর। রোশেনারাকে ছোট থেকে বড় করে ‘মানুষের মতো মানুষ’ করেছিলেন তাঁর স্বামীই। রোশেনারা মনে করেন স্বামীই ‘মহাদেব’। আর রশেনারা আজকের সমাজে আক্ষরিক অর্থেই ‘দুর্গতিনাশিনী’। তবে শাজাহান গত হয়েছেন দীর্ঘ বছর আগে। তবু ‘মহাদেব’ রয়ে গিয়েছেন ‘আজকের দশভূজা’র হৃদয়ে। 

রোশেনারা তখন খুদে। তিনি দেখতেন দুর্গাপুজোর সময় মোঙ্গলাপোতা রাজবাড়িতে দেবী সর্বমঙ্গলা দেবী’র আরাধনা হতো ধুমধাম করে। তবে এতো হিন্দুদের দেবী। তিনি মুসলিম। তবু ছুট্টে চলে যেতেন পুজোস্থলে। মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক গোঁড়া তখন বিষয়টা ভালো ভাবে নেননি। তবে ছোট্ট রোশেনারা তখন থেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন ওপরওয়ালা বলে কিছু থাকলে, তা সকলের। তিনি কখনও নিরাকার। আবার কখনও ধরা দেন বিভিন্ন রূপে। তাই ধর্ম বা জাতপাত তাঁর মনে বসাতে পারেনি কালো থাবা।

অলুক্ষণে এই মেয়েটা বড় হতে হতে হয়ে উঠতে শুরু করলেন প্রতিবাদী ও অসহায়ের ‘আশ্রয়’। তিনি নিজে লেখিকা, সমাজসেবী। পুঁথিগত শিক্ষা তাঁর নেই, একথা বারবার বলেছেন তিনি। তবে সমাজের শিক্ষায় শিক্ষিত। সেই তিনিই শিক্ষার আলোকে ভালোবেসে এখন ‘জীবনের বানী’ শোনান বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে। সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের ‘মুক্তি’ হয়ে উঠেছেন তিনি। কত দুর্গতি যে নাশ করেছেন, তার ইয়াত্তা নেই। কারও শিক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছেন, আবার কারও পোশাকের ভার নিয়েছেন। কাওকে বা আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছেন। করোনার সময়েও এগিয়ে এসেছিলেন ‘আজকের দশভূজা’। বারবার করেছেন সচেতনতা প্রচার। বুঝিয়েছেন, নারী অধিকারের কথা। তিনি মূলত একাই কাজ করেন। তবে ‘কন্ঠস্বর’ নামে একটি সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত তিনি।

বারবার দৃঢ় কন্ঠে রোশেনারা বলেছেন, ‘মুসলিম সম্প্রদায়ে এখনও অনেক অনেক জায়গায় অবরুদ্ধ প্রবণতা আছে’। তাই তিনি তাঁদের মুক্তিদাত্রী হয়ে উঠেছেন বহু বছর আগে থেকেই। সেই কাজেও এই বৃদ্ধ বয়সেও নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন রোশেনারা।  এখনও ভেঙে চলেছেন সমাজের মৌলবাদের বেড়াজাল। ‘দুর্গতি’ নাশ করে দেখাচ্ছেন ‘জীবনের আলো’। অলুক্ষণে ছোট্ট রোশেনারা আজ সমাজের ‘দুর্গা’ (DURGA)। এই বস্তাপচা সমাজের ‘অপয়া’রা সত্যিই আলোর দিশারী হয়ে ওঠে। রোশেনারা’র মতো আরও অনেক’অপয়া’ বারবার আলো দেখাক অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে। 

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সোমবার পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ঘরে পৌঁছে যাবে

সুকান্তের জেলায় ভোট প্রশিক্ষণে গরহাজির ৭০০ কর্মীকে শোকজ

১৪ বছর আগে শিলান্যাস, আজও বাস্তবায়িত হয়নি আমতা-বাগনান রেলপ্রকল্প

সন্দেশখালিতে ফের রাজনৈতিক পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ,সংঘর্ষ

হার নিশ্চিত দেখেই দিল্লিতে ছুট বিজেপি প্রার্থী বিস্তার

ইডি-সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে কমিশনের কাছে নালিশ তৃণমূলের

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর