নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি : কংগ্রেসের পাশে আন্না হাজারের সৈনিকরা। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে গোটা দেশজুড়ে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করছে কংগ্রেস। সেই যাত্রায় অংশ নেবেন যোগেন্দ্র যাদব, মেধা পাটেকর, অরুণা রায়, সৈয়দ কাশিম, বি রাজগোপালের মতো সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সোমবার দিল্লির কন্টিনেন্টাল ক্লাবে রাহুল গান্ধির সঙ্গে বৈঠক হয় এই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের। সেখানেই আন্না হাজারের সহযোগীরা কংগ্রেসের কর্মসূচিতে সামিল হতে সম্মত হন। কংগ্রেসের এই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ অবশ্য কোনও দলীয় পতাকা বা প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে না।
২০১৪ সালে দিল্লিতে আন্না হাজারের নেতৃত্বে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন সাড়া ফেলে দেয়। সেই আন্দোলন ছিল মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে ইউপিএ সরকারের পতন আরও নিশ্চিত করে আন্না হাজারের আন্দোলন। সেই ঘটনার আট বছর পর এবার কংগ্রেসের ডাকা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন সেই সময়ের আন্নার সহযোগীরা। এবিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি যোগেন্দ্র যাদব বলেন, ‘দেশজুড়ে বিজেপি-আরএসএস যে ভয়ের, ঘৃণার বাতাবরণ তৈরি করেছে, তার থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার। তাই আমরা কংগ্রেসের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছি।’ কংগ্রেসের এই কর্মসূচি সময়পোযোগী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘মিলে কদম, জুড়ে ওয়াতন’। অর্থাৎ পায়ে পায়ে পা মিলিয়ে দেশ জোড়ার সংকল্প। এমন ট্যাগলাইনেই ৭ সেপ্টেম্বরের দেশব্যাপী ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করছে কংগ্রেসের। শতাব্দী প্রাচীন দলটির তরফে মঙ্গলবারই উন্মোচিত হল এই মেগা কর্মসূচির লোগো ও ওয়েবসাইট। তবে বিভিন্ন ভাষায় লোগো থাকলেও বাংলায় কোনও লোগো প্রকাশিত হয়নি। ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটায় শুরু হবে ওই যাত্রা। ১২টি রাজ্য ও ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১৫০ দিনে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পথ হাঁটার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই মিছিলের যাত্রাপথের সবথেকে বেশি অংশ রয়েছে কেরল, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও তেলেঙ্গানায়। এদিন জয়রাম রমেশ ও দ্বিগ্বিজয় সিংয়ের মতো দুই বর্ষীয়ান নেতা এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই পদযাত্রা সম্পর্কে ঘোষণা করেন।
জানা গিয়েছে, যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের মোট তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- ভারতযাত্রী (যাঁরা পুরো যাত্রাপথেই থাকবেন), অতিথিযাত্রী (যে রাজ্যে যাত্রা যাচ্ছে না, তাদের প্রতিনিধিরা) ও প্রদেশযাত্রী (যে প্রদেশে যাত্রা যাবে তাদের প্রতিনিধি)। একশো করে তিন ধরনের যাত্রী সবসময় থাকবে। কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, রাহুল গান্ধী গোটা যাত্রাতেই থাকছেন যাত্রার পুরোভাগে। এও জানা যাচ্ছে, যাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা কেউ হোটেলে থাকবেন না। ট্রাক ও কন্টেনারেই থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে।
কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’কে তারা রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে না। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই যাত্রার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। দেশের শান্তি, সম্প্রীতি রক্ষা করতে দেশহিতের প্রশ্নেই এই কর্মসূচির পরিকল্পনা বলে দাবি তাদের। কংগ্রেসের প্রতীক, পতাকা কিছুই থাকবে না যাত্রায়। মূল যাত্রা ছাড়াও দেশের সব প্রান্তেই হবে যাত্রা।