এই মুহূর্তে




মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে মহা চমক, ২০ বছর বাদে এক মঞ্চে উদ্ধব-রাজ




নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে শনিবার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে রইল। যে ছবিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল তা আজ সত্যি হল আজ। শনিবার উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরেকে একসঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গেল, তাও আবার সপরিবারে। দুই ভাইকে ওরলিতে মারাঠি বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে একই সঙ্গে দেখা গিয়েছে।  কিন্তু রাজনৈতিক পণ্ডিতরা বলছেন দুই ভাইয়ের একত্রিত হওয়া হয়তো মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে।

এদিন মঞ্চ থেকে মারাঠি ভাষার পাশে দাঁড়িয়ে রাজ ঠাকরে বলেন,  “দক্ষিণে, স্ট্যালিন, কানমোঝি, জয়ললিতা, নারা লোকেশ, আর রহমান, সূর্য, সবাই কি ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন? এক বক্তা যখন হিন্দিতে বক্তব্ব্য রাখতে শুরু করেছিলেন তখন রহমান ডায়াস ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বালাসাহেব এবং আমার বাবা শ্রীকান্ত ঠাকরে ইংরেজিতে পড়াশোনা করেছেন, কিন্তু তাঁদের মাতৃভাষা মারাঠি। বালাসাহেব ঠাকরে মারাঠি ভাষার প্রতি খুবই সংবেদনশীল ছিলেন। তিনি ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছিলেন, কিন্তু মারাঠি ভাষার সঙ্গে কোনও আপস করেননি। তাই মারাঠিকে হীন চোখে দেখা উচিত নয়।”

বিজেপিকে কার্যত ধুয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, “যখন আমাদের সন্তানরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করতে যায়, তখন আমাদের মারাঠি ভাষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, লালকৃষ্ণ আদভানি তো মিশনারি স্কুলে পড়েছিলেন, তাহলে কি তাঁরও কি হিন্দুত্ববাদ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে? আমরা হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া সহ্য করব না। ওরা আসলে মুম্বইকে মহারাষ্ট্র থেকে আলাদা করতে চায়, এটাই ওদের এজেন্ডা। কিন্তু যদি এমনটি করার সাহস ওরা করে তাহলে মারাঠি ভাষাভাষীদের শক্তি সম্পর্কেও সম্যক ধারণা করতে পারবেন। এখন তাঁরা বিষয়টি ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা বলছেন ঠাকরের সন্তানরা ইংরেজিতে পড়াশোনা করেছে। এটা কী অন্যায়? অনেক বিজেপি নেতা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন কিন্তু কেউ তাঁদের হিন্দুত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে না।”

মারাঠি ভাষাকে সন্দেহের চোখে না দেখার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিরোধী দলকে কার্যত সতর্ক করে রাজ বলেন, ‘এই তিন ভাষার সূত্র কোথা থেকে পেলেন? আপনি কি ছোট বাচ্চাদের উপর এটা চাপিয়ে দেবেন? কেউ মহারাষ্ট্রের দিকে সন্দেহের চোখে তাকাবেন না। হিন্দি একটি ভাল ভাষা, সব ভাষাই ভাল। যদি কারো সাহস থাকে, তাহলে তারা মুম্বইতে ভাগ্য পরীক্ষা করে নিতে পারে।’

রাজ আরও বলেন, “আমি আমার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম যে আমার মহারাষ্ট্র যে কোনও রাজনীতি এবং লড়াইয়ের চেয়ে বড়। আজ ২০ বছর পর আমি আর উদ্ধব একসঙ্গে এসেছি। বালাসাহেব যা করতে পারেননি, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ তা করে দেখিয়েছেন। আমাদের দু’জনকে একসঙ্গে আনার কাজ করেছেন তিনি।” এদিন রাজ ঠাকরে স্ত্রী শর্মিলা, ছেলে অমিত ও মেয়ে উর্বশীকে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। অন্যদিকে উদ্ধব স্ত্রী রশ্মি এবং দুই ছেলে আদিত্য ও তেজসকে নিয়ে আসেন।

উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে ওরলিতে ‘বিজয় সভা’-তে আসার আগে শিবাজি পার্কে অবস্থিত বাল ঠাকরের স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন। এই সমাবেশ শুরুর আগে সম্পর্কে শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেন, ” মহারাষ্ট্রে আমাদের সকলের জন্য এটি একটি উৎসবের মতো। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পরিবারের দুই বিশিষ্ট নেতা অবশেষে ২০ বছর পর একই মঞ্চে দেখা করতে চলেছেন। আমরা মহারাষ্ট্রের স্বার্থে একত্রিত হচ্ছি। আমাদের সবসময়ই ইচ্ছা ছিল যে আমরা মহারাষ্ট্রের জনগণের বিরুদ্ধে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করব। আজ এখানে এসে উদ্ধব এবং রাজ ঠাকরে অবশ্যই মারাঠি মানুষদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেবেন।”

আসন্ন বিএমসি নির্বাচনে বিজেপি সাংসদ নারায়ণ রানে এবং শিবসেনা (শিন্দে গোষ্ঠী) রামদাস কদম এই ঐক্যকে প্রাসঙ্গিক বলে মনে তুলেছেন। একই সঙ্গে এমএনএস নেতা প্রকাশ মহাজন আশা প্রকাশ করেছেন যে এই প্ল্যাটফর্মটি মারাঠি সমাজের ঐক্য এবং সম্মানের প্রতীক হয়ে উঠবে। এখন প্রশ্ন হল ঠাকরে ভাইদের এই ‘মারাঠি জোট’ কি কেবল মঞ্চেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সমীকরণেও দেখা যাবে। এই জোট কি সত্যিই বড় কোনও পরিবর্তন আনবে? উত্তর দেবে সময়।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

প্রতিদিন আত্মহত্যা করছেন ৮ কৃষক, বিধানসভায় তাস খেলায় মগ্ন মন্ত্রী

‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সংসদে আলোচনায় রাজি কেন্দ্র

হিন্দু নন, তিরুপতি মন্দির থেকে ছাঁটাই ৪ কর্মচারী, ধর্মীয় বিতর্কের মুখে TTD

একমুখী লেনে ঢুকতে বাধা! হোমগার্ডকে ৫ কিমি রাস্তা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল বেপরোয়া গাড়ি

মর্মান্তিক! তিন নাবালক সন্তানকে বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী দম্পতি, কারণ খুঁজছে পুলিশ

‘এক ফুল দো মালি’, হিমাচলে একই পাত্রীকে বিয়ে করলেন দুই সহোদর

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ