এই মুহূর্তে




রং নয়, এখানে হোলি খেলা হয় চিতাভস্ম দিয়ে – জেনে নিন মশান হোলির অজানা কাহিনি




পৃথ্বীজিৎ চট্টোপাধ্যায়: দোলযাত্রা বা হোলি একটি অতি জনপ্রিয় ও মাহাত্ম্যপূর্ণ হিন্দু উৎসব। যা রঙের উৎসব নামেও পরিচিত। পৌরাণিক কাহিনী মতে এটি রাধা ও কৃষ্ণের শাশ্বত ও ঐশ্বরিক প্রেম উদযাপনের উৎসব। কথিত আছে, রঙের উৎসব হোলি সর্বপ্রথম পালন করেছিলেন স্বয়ং কালের কর্তা মহাকাল। তবে মহেশ্বর মর্ত্যলোকে খেলেননি, হরিহর পুরাণ মতে তিনি খেলেছিলেন দেবলোকে। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী বিবাহের পর রঙ্গভরী একাদশীতে পার্বতীকে বিবাহের আনন্দে পার্বতী ও ভক্তদের সঙ্গে হোলি খেলেছিলেন মহাদেব, তাও আবার চিতাভস্ম দিয়ে। বলা বাঞ্ছনীয় যে, এই কাহিনী নিয়ে শিবপুরাণ, স্কন্দপুরাণ, ও প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে অবশ্য খান চারেক কাহিনি রয়েছে।

জনশ্রুতি আছে, মহা শিবরাত্রিতে শিব ও পার্বতীর বিবাহের পর বেশ কিছুদিন শ্বশুরবাড়িতে কাটিয়েছিলেন মহাদেব। এরপর, ‘রঙ্গভরী একাদশী’র দিন ভগবান শিব প্রথমবারের জন্য পার্বতীকে কাশীতে নিয়ে এসেছিলেন। সেই খুশিতে গোটা কাশীবাসী পরমানন্দে রং খেলায় মেতে উঠেছিল। এমনকী দেবাদিদেবও খুবই আনন্দিত ছিলেন। কিন্তু সেই রং খেলায় মণিকর্ণিকা ঘাটের শ্মশানে থাকা প্রেত-আত্মারা মেতে উঠতে পারেনি। তাই, ভগবান শিব চিতাভস্ম দিয়ে তাঁদের সঙ্গে হোলি খেলেছিলেন এবং সেই খেলাতে মহেশ্বরের সঙ্গ দিয়েছিলেন স্বয়ং আদিশক্তি পার্বতী।

আর  একটি কাহিনি মতে, বিবাহের পূর্বেই শিব-পার্বতী স্বর্গের দেবদেবীদের সঙ্গে হোলি খেলেছিলেন। যে হোলি খেলা হয়েছিল ‘রঙ্গভরী একাদশী’র দিন। কিন্তু স্বর্গের সেই খেলায় উপস্থিত ছিলেন না মহাদেবের অনুচর নন্দী-ভৃঙ্গীদের কেউই। তাই দেবদেবীদের সঙ্গে হোলি খেলার পরদিন মহাদেব পার্বতীকে নিয়ে নিজের শহর কাশীতে এসেছিলেন আর সেখানেই অগণিত ভক্তবৃন্দের সাথে হোলি খেলায় মেতে উঠেছিলেন মহাদেব।

আরও এক কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। ওই কাহিনি অনুযায়ী, রঙ্গভরী একাদশীর দুদিন পরে সস্ত্রীক দেবাদিদেব হঠাৎ করে মনিকর্ণিকা ঘাটে নন্দীভৃঙ্গী ও অন্যান্য অনুচর সহ হাজির হয়েছিলেন। এরপর মহাদেবের খুব রং খেলার ইচ্ছে জাগলে শ্মশানবাসীরা রং না পেয়ে মহাদেবকে শ্মশানের ছাই এনে দিয়েছিলেন। তাতেই অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে মহেশ্বর সেই ভস্ম দিয়েই হোলি খেলেছিলেন। সর্বশেষ কাহিনিটি হল, মৃত্যুঞ্জয় শিব একবার রঙ্গভরী একাদশীর দিন যমরাজকে পরাজিত করেছিলেন ও সেদিনই জন্ম হয়েছিল মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের। শিব যমকে পরাস্ত করে হাজির হয়েছিলেন কাশীতে। অতঃপর মহাদেব মণিকর্নিকা ঘাটে ভক্তদের সাথে চিতা ভস্ম দিয়ে হোলি খেলে জয়ের আনন্দ উদযাপন করেছিলেন।

শোনা যায়, মণিকর্ণিকা ঘাটের এই চিতাভস্ম দিয়ে রং খেলা দীর্ঘদিন ধরেই সাধু সন্তদের মধ্যে সীমিত ছিল। এই হোলি ‘মশান হোলি’ বা ‘চিতা কি ভস্ম হোলি’ নামে খ্যাত। ফাল্গুন মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশীর পরের দিন এই মসান হোলি পালিত হয় । দুদিন ধরে চিতাভস্ম ও আবীর দিয়ে মসান হোলি খেলা হয় সেখানে। আগে সাধারণ মানুষ এই রং খেলায় অংশ নিতে পারতেন না। তবে এখন বারাণসীর এই মণিকর্ণিকা ঘাটে এই চিতাভস্ম দিয়ে হোলি খেলায় সমাজের নানা স্তরের মানুষ অংশ নেন। যা দেখতেও বহু মানুষ হাজির হন বারাণসীতে। এরই সঙ্গে চিরাচরিত লোকগীতি বাজে ‘খেলে মশানে মে হোলি দিগম্বর, খেলে মশানে মে হোলি…’। বারাণসীর হরিশ্চন্দ্র ঘাটে এবং মণিকর্নিকা ঘাটে এই হোলি বিভিন্ন দিনে খেলা হয়।  রংভরী একাদশীর দিনে এই হোলি হরিশ্চন্দ্র ঘাটে এবং রংভরী একাদশীর পরের দিন মণিকর্নিকা ঘাটে পালিত হয়।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার টোপে ছাত্রীদের ধর্ষণ, ৭২ ঘন্টা বাদে পুলিশি জালে হাথরসের অধ্যাপক

নিলামে রেকর্ড গড়ল মকবুল ফিদা হুসেনের আঁকা ছবি, বিক্রি হল কত টাকায়?   

সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে বৃদ্ধাকে ২ মাস ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট, অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ২০ কোটি

বিশ্বের সবচেয়ে দামি কুকুর! ৫০ কোটি দিয়ে কিনেছেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা

ছত্তিশগড়ে জোড়া এনকাউন্টারে খতম ৩০ মাওবাদী, শহিদ এক ১ পুলিশ কর্মী

মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিল ইলন মাস্কের ‘এক্স’, সঙ্ঘাতের কারণ কী?

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর