নিজস্ব প্রতিনিধি: ত্রিপুরা হোক কিংবা বাংলা এমনকি গোয়া, প্রত্যেক জায়গাতেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে কংগ্রেসের বিরোধিতার সুর। সেই একই লাইনে হাঁটেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের দ্বারায় সম্ভব নয়, বিজেপিকে শক্তি দিচ্ছেন সোনিয়া-রাহুলরা। তাই কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই ২৪-এর নির্বাচনে বাকি আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে মোদি বিরোধিতায় নামতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। এর মধ্যেই কংগ্রেসের চিন্তা বাড়িয়ে ও সোনিয়া-রাহুলের হাড় কাঁপুনি ধরিয়ে একে একে গান্ধি পরিবার ঘনিষ্ঠদের ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করাচ্ছেন মমতা-অভিষেক। আর এতেই জাতীয় রাজনীতিতে চিন্তা বাড়ছে সোনিয়া গান্ধির। তাঁর চিন্তা, জাতীয় স্তরে বিরোধী রাজনীতির উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে। আঞ্চলিক দলের শক্তি বাড়লে ক্ষতি হবে কংগ্রেসের। আর জাতীয় স্তরে উজ্জ্বল হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ।
সম্প্রতী যে রাজ্য গুলিতে সংগঠন বাড়িয়েছে তৃণমূল, সেখানে গান্ধি পরিবার ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতাদের নিজেদের ঝুলিতে পুড়েছেন তৃণমূল নেত্রী। গোয়ায় লুইজিনহো ফালেরিয়া, সুস্মিতা দেব, সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন ও সদ্য কীর্তি আজাদ কিংবা রাহুল ঘনিষ্ঠ অশোক তানওয়ার। লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে বিগত কয়েকমাসে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন মূলত গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠরাই। আর এতেই চিন্তা বাড়ছে কংগ্রেস সভানেত্রীর। একেই গান্ধি পরিবারের বিরুদ্ধে বিরোধে রয়েছে জি-২২। যে কোনও দিন তৃণমূলে ঝাঁপ দিতে পারেন আনন্দ শর্মা, গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিংভির মত নেতারা। কিন্তু তার আগেই তৃণমূলে গান্ধি পরিবার ঘনিষ্ঠ নেতাদের আনাগোনায় চিন্তায় সোনিয়া-রাহুল।
মোদি বিরোধিতায় একাধিক আঞ্চলিক দল মাঠে নামলেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে নারাজ অনেকেই। তাঁদের কাছে মুখ মমতাই, তালিকায় অখিলেশের সপা, চন্দ্রশেখর রাও-এর টিআরএস, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির মত দল। তাই কংগ্রেস বাদে মোদি বিরোধী হিসেবে উঠে আসাটাই এই মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আর সেই চ্যালেঞ্জে নেমেই কংগ্রেসের ঘর ভেঙে চিন্তা বাড়াচ্ছেন সোনিয়া-রাহুলদের। প্রসঙ্গত, চারদিনের দিল্লি সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পেলেও সাড়া দেন নি সোনিয়া গান্ধি। কানাঘুশো শোনা যাচ্ছে রাহুলের তীব্র আপত্তির জেরেই হয়ত মমতা-সোনিয়া সাক্ষাৎ হবে না চলতি সফরেই। যার পিছনে একটাই কারণ, কংগ্রেসের ঘরে ভাঙন।