নিজস্ব প্রতিনিধি : ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-তে ঈশ্বরের আপন দেশ কেরালাকে বদনাম করতে চেষ্টা কোনও কসুর করেননি বাঙালি চিত্র পরিচালক সুদীপ্ত সেন। কিন্তু সেই কেরালাই যে আসল কেরালা নয়, তা আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল। সৌদি আরবে আটকে থাকা ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আবদুল রহিমকে ছাড়িয়ে আনতে ঝাঁপিয়ে পড়ল ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সব মানুষ। ৪০ দিনে জোগাড় করে ফেলল ৩৪ কোটি টাকা। খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর অনেকেরই অভিমত, এটাই ‘দ্য রিয়েল কেরালা স্টোরি’।
ঠিক কী ঘটেছিল, তা একবার দেখে নেওয়া যাক। কোঝিকোড়ের ফেরোকে এলাকার বাসিন্দা আব্দুল রহিম বেশি রোজগারের আশায় ১৮ বছর আগে সৌদি আরবে যান। রহিমের বয়স তখন ২৬ বছর। একজন সৌদি আরবের নাগরিকের বাড়িতে ড্রাইভারের কাজ পান রহিম। সেইসঙ্গে সেই বাড়ির গৃহকর্তার ছেলের কেয়ারটেকারের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। গৃহকর্তার সন্তানের বেশ কিছু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ছিল। মেডিক্যাল সাপোর্ট ডিভাইসের মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া থেকে শুরু করে খাদ্য গ্রহণ করতে হত তাকে। এই সব বিষয়ে দেখাশোনার দায়িত্বই ছিল রহিমের কাঁধে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ছেলেটির মৃত্যু হয়। আর সব দোষ এসে পড়ে রহিমের ওপর।
রহিমকে ২০১৮ সালে মৃত্যুদণ্ড দেয় সেই দেশের আদালত। আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল জানানো হয়। সেখানেও কোনও লাভ হয়নি। তবে শেষপর্যন্ত ১৫ মিলিয়ান সৌদি রিয়াল অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৩৪ কোটি টাকার বিনিময়ে রহিমকে দেশে ফেরত পাঠাতে রাজি হয় সৌদি আরবের ওই পরিবার। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর এই বিষয়ে চুক্তি সই হয়েছিল। সেই চুক্তি শেষের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছর আগামী ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে আব্দুল রহিমকে মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে বাঁচাতে হাতে আর মাত্র কয়েকদিনই বাকি ছিল। শেষ পর্যন্ত এই বিপুল পরিমাণ টাকা জোগাড় করা সম্ভব হল। ইতিমধ্যে রহিমের মা ফতিমা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁর ছেলেকে প্রাণে বাঁচানোর জন্য।