নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতের দশকে ২ পয়সা ভাড়া বাড়ার প্রতিবাদে বামপন্থীরা কলকাতার(Kolkata) রাস্তায় একের পর এক ট্রামে ভাঙচুর চালিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। পরের প্রায় অর্ধ শতাব্দীকালে আর কলকাতার বুকে রাস্তার মধ্যে দাউ দাউ করে আগুনে পুড়তে দেখা যায়নি কোনও ট্রামকে(Tram)। কিন্তু শুক্রবার সেই ছবিটাই আবারও ফিরে এল কলকাতার বুকে। এদিন মধ্য কলকাতার নোনাপুকুর(Nonapukur)ট্রামডিপোর কাছে এ জে সি বোস রোডের ওপর চলন্ত একটি এসি ট্রামে আগুন লেগে যায়। আগুন লাগার সময় সেই ট্রামের ভিতরে ছিলেন খুব করেও জনা ৪০ যাত্রী। আগুন লাগার জেরে তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারপরেই জ্বলন্ত ট্রাম থেকে নামতে যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়লেও হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই যাত্রীবাহী এসি ট্রামটি গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলার দিকে যাচ্ছিল। এ জে সি বোস রোড(A J C Bose Road) থেকে ট্রামটি বাঁদিকে বেঁকে ধর্মতলার রাস্তা ধরতেই আচমকা আগুন লেগে যায় ট্রামে। যাত্রীদের কথায়, হঠাৎই করেই তাঁরা ট্রামের মধ্যে বিকট আওয়াজ পান। এরপরই তাঁরা দেখেন ট্রামে আগুন ধরে গিয়েছে। ট্রামের পিছনের দিকের অংশে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। তারপরেই যাত্রীরা ট্রাম থেকে হুড়মুড়িয়ে নেমে পড়েন। ট্রামের চালক ও কন্ডাক্টরও নেমে যান ট্রাম থেকে। সেই সময় রাস্তার মধ্যেই দাউদাউ করে করে জ্বলতে থাকে সেই ট্রাম। তার জেরে কিছুটা হলেও যান চলাচল ব্যাহত হয় এ জে সি বোস রোড ও এলিয়ট রোডে। যেহেতু নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর কাছেই কলকাতা পুরনিগমের জলের গাড়িগুলি থাকে তাই আগুন নেভানোর জন্য পুরনিগমের জলের গাড়ি নিয়ে আসা হয়। যদিও সেই কাজও শুরু হয় আগুন লাগার প্রায় মিনিট ২০ পরে। আগুন নেভাতে তৎপর হন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তাঁরা বালি হাতে ছুটে আসেন। কিন্তু কোনওভাবেই আগুনের ওপর নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যায়নি।
কলকাতা পুরনিগমের জলের গাড়ি থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হলেও ততক্ষণে ট্রামের অনেকটা অংশ আগুনের গ্রাসে চলে যায়। এরপর দমকল বাহিনী এসে পৌঁছয়। তাঁরাই এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ট্রামটি দীর্ঘক্ষণ ওই জায়গায় আটকে থাকায় এ জে সি বোস রোডের শিয়ালদামুখী যানবাহণ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। তবে ঘটনার জেরে মল্লিকবাজার থেকে শিয়ালদহগামী ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কলকাতা ট্রাম কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, শর্টসার্কিট থেকেই ট্রামে আগুন লেগেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবুও আগুন লাগার কারণ জানতে বিভাগীয় তদন্ত হবে। পরিবহণ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা বিষয়টি তদন্ত করবেন।