নিজস্ব প্রতিনিধি: এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কলকাতা লাগোয়া ভাঙড় এলাকার কাশীপুর থানার পোলেরহাট এলাকা। সেখানে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পোলেরহাট এলাকা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর চেষ্টা করলে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এলাকাবাসীরা। সেই সময়েই পুলিশকে আক্রমণ করার ঘটনা ঘটে যাতে ৫জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ১৫ বছর আগে শাকশহর গ্রামের মরিয়ম বিবি(৩৫)-কে বিয়ে করেছিলেন পোলেরহাটের বাসিন্দা আরশেদ আলি মোল্লা। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলেও রয়েছে। অভিযোগ, সম্প্রতি আরশেদের সঙ্গে অন্য এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই ঘটনা জানতে পেরে গিয়েছিলেন মরিয়ম। তা নিয়েই অশান্তি শুরু হয় তাঁদের পরিবারে। প্রতিদিনই তাঁদের বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেতেন প্রতিবেশীরা। মরিয়ম নিজেও প্রতিবেশীদের সেকথা জানিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যে এক-আধবার ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করতেন প্রতিবেশীরাও। কিন্তু আরশেদ তাতে আরও বিরক্ত হতেন বলে দাবি প্রতিবেশীদের। শুক্রবার রাতেও তাঁরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুনেছিলেন বলে এদিন তাঁরা দাবি করেছেন। শনিবার সকালে মরিয়ম ঘুম থেকে উঠছে না দেখে, তাঁকে প্রথমে ডাকতে যান তাঁর ছেলে-মেয়ে। তারপর খবর যায় প্রতিবেশীদের কাছে। মরিয়মের সাড়া না পেয়ে বিপদ আঁচ করতে পারেন প্রতিবেশীরা। ডাকা হয় চিকিৎসককে। তিনিই জানান মারা গিয়েছেন মারিয়ম। তবে তাঁর মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয় সেটাও ওই চিকিৎসক জানিয়ে দেন।
এরপরেই শুরু হয় অশান্তি। সেই সুযোগে গা ঢাকে দেয় আরশেদ। কিন্তু তার প্রেমিকা ধরা পড়ে যায় এলাকাবাসীর হাতে। সেই মহিলাকে মারধরও করেন এলাকাবাসী। সেই খবর যলে যায় পুলিশের কানে। কাশীপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মারিয়মের দেহ উদ্ধার করতে গেলেই বাধা দেন এলাকাবাসী। শুরু হয় পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ। আটকে রাখা হয় মৃতদেহও। পুলিশ জোর করে দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর চেষ্টা করলে, তা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এলাকাবাসীরা। তার জেরেই দুই পক্ষের মধ্যে বাঁধে সংঘর্ষ। তাতেই আহত হন ৫জন পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে ১জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের সকলকে জিরানগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ আরশেদ আলি মোল্লার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। মরিয়মের ছেলে এদিন দাবি করেছে, ‘আমার বাবার সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। তাতেই খুন হতে হয়েছে আমার মাকে। বাবাই মায়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মাকে খুন করেছে।’