নিজস্ব প্রতিবেদক: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতা এসে পৌঁছেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সকলেরই অনুমান ছিল, তিনি হাজিরা দেবেন সিবিআই (CBI) দফতরে। তাঁর হাজিরা দেওয়ার সময় ছিল সকাল ১১ টায়। তবে বুধবার সকালে দেখা গেল রাস্তা থেকে বেরিয়ে অনুব্রত নিজাম প্যালেস নয়, পৌঁছলেন এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে।
মঙ্গলবার চিনারপার্কের বাড়িতেই রাত কাটিয়েছিলেন অনুব্রত। বুধবার সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে অনুব্রতের গাড়ি ধরে ইএম বাইপাসের রাস্তা। সকলেই ভেবেছিলেন তিনি যাবেন সিবিআই দফতরে। সেই মতো নিজাম প্যালেস জুড়ে বাড়ানো হয়েছিল নিরাপত্তা। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জেরা করার জন্য প্রস্তুত ছিল সিবিআই। এএসপির (ASP) নেতৃত্বে চিল পাঁচ প্রতিনিধি দলের সদস্য।
ইএম বাইপাস হয়ে অনুব্রতের গাড়ি ধরে সোজা মা ফ্লাই ওভারের রাস্তা। এরপর তা সোজা ঢুকে যায় এসএসকেএম হাসপাতালে। অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে তাঁর বুকে ব্যথা হয়েছিল। তারপরেই যোগাযোগ করা হয়েছিল হাসপাতালে। সকাল ১১ টা ২৫ নাগাদ অবশেষে অনুব্রত আসেন এসএসকেএম-এ। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তিন তলায়। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ও স্বাস্থ্যকর্মী।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুকে ও পেটে ব্যথা নিয়ে তিনি ভর্তি হতে চেয়েছিলেন উডবার্ন ব্লকের সাড়ে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। আপাতত তিনি ভর্তি ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয়েছে ৮ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। আপাতত তাঁর চিকিৎসার জন্য এসেছেন দুই চিকিৎসক। ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি’।
উল্লেখ্য, সাড়ে ১২ নম্বর ব্লক বরাদ্দ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপালের মত ভিভিআইপি’দের জন্য। উডবার্নে ১৩ নম্বর কেবিন নেই। ‘অপয়া’ মনে করা হয় এই সংখ্যাকে। ব্রিটিশ আমল থেকেই তাই ১৩- এর জায়গায় এই কেবিনের নম্বর সাড়ে ১২ ।
জানা গিয়েছে, ৮ সদস্যের মধ্যে ৫ সদস্যের মেডিক্যাল টিম তাঁকে পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা করা হয় প্রায় ১ ঘন্টা ধরে। এই মুহূর্তে তিনি রয়েছেন অক্সিজেন সাপোর্টে।
প্রসঙ্গত, গরুপাচার মামলার তদন্তে এই নিয়ে সিবিআই পঞ্চমবার তলব করেছিল অনুব্রতকে। উল্লেখ্য, অনুব্রতের চিঠি নিয়ে এদিন তাঁর দুই আইনজীবী পৌঁছে যান নিজাম প্যালেসে। অনুব্রতের সই করা সেই চিঠিতে লেখা আছে, সদিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি আসতে পারেননি সিবিআই দফতরে। কারণ হিসেবে জানান, আগের দিন রাতে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যান তিনি। তবে তদন্তকারী সংস্থা মনে করলে এসএসকেএম- এ এসে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই। তিনি তদন্তে সবরকম সাহায্য করবেন।