নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতে আর ৪৮ ঘন্টাও সময় নেই। তারপরেই বাংলায়(Bengal) পা রাখতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। তার আসার আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শ ছিল বাংলার নেতৃত্বের প্রতি, তাঁরা যেন শাহি সভায় শাহের সামনে দলের ঐক্যবদ্ধ রূপটা তুলে ধরেন। তাতে খুশিই হবেন শাহ। বাংলায় দলকে কীভাবে চাঙ্গা করে তোলা যায় তা নিয়ে নতুন করে ভাববেন শাহ। কিন্তু সেই পরামর্শ মেনে চলা তো দূরের বাত, নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল আরও প্রকট ভাবে এখন সামনে তুলে ধরছে পদ্মশিবির(Bengal State BJP)। এই যেমন শাহের আসার আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা(Anupam Hazra) বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে নাম না করেই ‘বেইমান’ আখ্যা দিয়ে বসলেন। শুধু তাই নয়, এই ‘বেইমান’দের বিরুদ্ধে তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘এরা ঘর শত্রু বিভীষণ। তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং করে চলা পাবলিক।’ একই সঙ্গে জানিয়েছেন, শাহি সভার আমন্ত্রণ তিনি এখনও পাননি।
কী অভিযোগ অনুপমের? বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তন অধ্যাপক তথা প্রাক্তন সাংসদের দাবি, বঙ্গ বিজেপি এখন যারা চালাচ্ছেন্ম, সেই সব অযোগ্য নেতৃত্বদের জন্য বহু মানুষ বসে যাচ্ছেন এবং তাঁরা আগামীদিনে অন্য দলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে বিজেপি চলছে, তাতে দলের নীচুতলার বড় একটি অংশ অসন্তুষ্ট। এই অবস্থায় শাসক দলের সঙ্গে কীভাবে লড়াই করবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে অমিত শাহের বেঁধে দেওয়া আসন জেতার লক্ষ্যমাত্র কী ভাবে পূরণ করা যাবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনুপম। মজার কথা বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেও তৃণমূল, বিজেপি এবং বামেদের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য কিন্তু করেননি অনুপম।
রবিবার সন্ধ্যায় হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির দলীয় কার্যালয় উলুবেড়িয়ার মনসাতলার অদূরে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের(BJP Bnachao Mancha) ডাকে এক কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই অনুপম হাজরা তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, ‘বসে যাওয়া, বঞ্চিত হওয়া, পদহীন, মোদী ভক্ত বিজেপি কর্মীদের চাঙ্গা করতে নেমেছি আমি। একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, সেখানে এক বিজেপি নেতাকে বলতে শোনা গেছে আজকের আমার এই অনুষ্ঠানে যেন না আসে। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে বহু বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। ওই বিজেপি নেতৃত্বদের বক্তব্য অনুপম হাজরা বিজেপির কেউ নয়। তৃণমূল বাধা দিলে অন্য কথা। বিজেপির মিটিংয়ে লোক আসতে বাধা দিচ্ছে বিজেপির নেতৃত্বরাই। আবার তাঁদেরকেই জেলার নেতৃত্বের পদে বসিয়ে রেখেছে রাজ্য নেতৃত্বরা। যারা বিজেপির মিটিংয়ে বিজেপির লোকেদেরকে আসতে বাধা দিচ্ছে তাঁরা প্রত্যেকেই বেইমান। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সবাই চাইছে মোদীর তৃতীয়বারের জন্য আবার প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই একজোট হয়ে লড়তে চাইছেন। যারা ঘর শত্রু বিভীষণ, তাঁরা চাইছেন না মোদীজি তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসুক। এরা বেইমান। শাসক দলের সঙ্গে সেটিং করে চলছেন তাঁরা। একটা পঞ্চায়েতে জিততে পারছে না অথচ জেলা সভাপতি রাখা হয়েছে।’