নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রখর গরম আর চড়া রোদ্দুরের মধ্যে ডিউটি করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বাংলার(Bengal) পুলিশ কর্মীরা(Police Personals)। অনেকেই হিট স্ট্রোকে(Heat Stroke) আক্রান্ত হচ্ছেন। তার মাঝেই আবার শারীরিকভাবে ‘ফিট’ না থাকা সত্ত্বেও কোনও কোনও পুলিশকর্মী বাধ্য হচ্ছেন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ডিউটি করতে যেতে। তাঁদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এবার রোটেশন পদ্ধতিতে(Rotation System) ডিউটি বণ্টনের জন্য West Bengal Police State Welfare Committee’র তরফে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে নবান্নে(Nabanna)। সেখানে পরপর দু’টি ধাপে একই পুলিশকর্মীকে ডিউটি না দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কীভাবে এই প্রস্তাব কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, এখন রাজ্যের পুলিশ কর্মীদের একেবারে ভোর থেকে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোদের তেজ। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রিও পেরিয়ে গিয়েছে। এই অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে ডিউটি করছেন পুলিশকর্মীরা। কোথাও দু’দণ্ড বসা তো দূরের কথা, বেশিরভাগ সময় মাথার ওপর গনগনে সূর্য নিয়েই ডিউটি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এর ফলশ্রুতিতে ঘটে যাচ্ছে হিট স্ট্রোক, অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো ঘটনা। মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছেন অনেকে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্তাদের। পাশাপাশি, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতেও রীতিমতো ধকল পোহাতে হচ্ছে তাঁদের। গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে, ভোটের ডিউটি। ভোটকেন্দ্রে বুথের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও এলাকার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ভোটারদের লাইন দেখভাল করতে হচ্ছে রাজ্য পুলিশকেই। ধাপে ধাপে যেসব জেলায় নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে গোলমাল এড়াতে অন্যান্য জেলা থেকে পুলিশকর্মীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সভা-সমাবেশেও ডিউটি করতে হচ্ছে রাজ্য পুলিশকে।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মাত্র ৬টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়েছে দুই পর্বে। বাকি আছে আরও ৩৬টি লোকসভা কেন্দ্রে, যা আরও ৫টি পর্বে, ভোটগ্রহণ করা হবে। কিন্তু প্রথম দুই পর্বের ভোটগ্রহণের মধ্যেই নিচুতলার পুলিশকর্মীদের হাল কার্যত বেহাল। এই অবস্থায় বাকি ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে আরও কী হতে পারে সেটা ভেবেই চিন্তিত রাজ্যে পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁদের ধারনা দ্রুত কিছু না করলে রাজ্যের পুলিশকর্মীদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ার সংখ্যাও বাড়বে। এমনকি মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। এসব সমস্যার কথা মাথায় রেখেই রাজ্য পুলিশের Welfare Committee’র তরফে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, রোটেশন পদ্ধতিতে ডিউটি হলে পুলিশকর্মীদের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে না। তাঁরা কিছুটা বিশ্রামও পাবেন। তরতাজা হয়েই তাঁরা পরবর্তী ডিউটিতে যোগ দিতে পারবেন। নবান্ন সূত্রে খবর, এই প্রস্তাব কীভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, তার জন্য আলোচনা শুরু হয়েছে।