নিজস্ব প্রতিনিধি: নীতীশ কুমার দেশে তৈরি হওয়া বিজেপি বিরোধী জোট INDIA থেকে প্রস্থান করেছেন। কিন্তু সেই জোটে তিনি যে খুব বেশি দিন থাকবেন এটাও কেউ ধরে রাখেনি। তাই তাঁর জোট ছেড়ে যাওয়ার কোনও প্রভাবই পড়ছে না INDIA’র অন্দরে। বরঞ্চ নীতীশের জন্যই জোটে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কেননা তিনিই INDIA জোটকে সতর্ক করেছিলেন যাতে পাল্টিবাজ বিশ্বাসঘাতক গদ্দার নীতীশকে জোটের মুখ হিসাবে তুলে না ধরা হয়। এখন সেই জোট INDIA’র শরিকেরাই চাইছেন মমতার মডেলেই দেশের দারিদ্রতা(Poverty) দূর করার পরিকল্পনা নেওয়া হোক। কেননা কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকারের নীতি আয়োগও(Neeti Ayog) স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে দারিদ্রতা দূরীকরণে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, গুজরাতের মতো ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলির তুলনায় অনেক অনেক এগিয়ে রয়েছে মমতার বাংলা(Bengal)।
নীতি আয়োগ বিভিন্ন রাজ্যের বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচকের একটা হিসেব প্রতি বছর প্রকাশ করে যা Multidimensional Poverty Index নামেও পরিচিত। সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দেশে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের গড় ১১.২৮ শতাংশ। অথচ মমতার বাংলায় সেই সূচক ৮.৬০ শতাংশ। যা কার্যত সাফ চোখে আঙুল দেখিয়ে বলে দিচ্ছে, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচকের হিসাবে বাংলার সূচক দেশের জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেক কম। আর বাংলার বুকে এই দারিদ্রতা কমার নেপথ্যে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা শতাধিক আর্থসামাজিক প্রকল্প যার সুফল বাংলার কোটি কোটি মানুষ পেয়ে চলেছেন। কেন্দ্র সরকার এখনও প্রতিনিয়ত বাংলাকে একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চলেছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি থেকে বঞ্চিত না হলে বাংলার দারিদ্র্যের মাত্রা আরও কম হতো। সব থেকে বড় কথা পাল্টিবাজ নীতীশের রাজ্য বিহার দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি দারিদ্রতা সূচকের মাপকাঠিতে উঠে এসেছে। সেখানে সূচক উঠেছে ২৬.৫৯ শতাংশ।
নীতি আয়োগের রিপোর্ট এটাও বলছে, খাস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য গুজরাতও বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচকের তালিকায় বাংলার পিছনে পড়ে গিয়েছে। সেখানে সূচক উঠেছে ৯.০৩ শতাংশ। আবার বিজেপি শাসিত রাজস্থান, ছত্তিশগড়, ত্রিপুরা সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যতা দেশের গড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। যেমন উত্তরপ্রদেশে ১৫.০১ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ২০.৬৩ শতাংশ, অসমে ১৪.৪৭ শতাংশ। সেই জায়গায় মমতার সাফল্য এল কীভাবে? উত্তর একটাই মমতার নিরলস প্রচেষ্টা। কেন্দ্র সরকার পদে পদে বাংলাকে বঞ্চিত করলেও মমতা বাংলার মানুষকে যুগিয়ে গিয়েছেন। রেশন থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী, মেধাশ্রী থেকে ঐক্যশ্রী, কৃষকবন্ধু থেকে মৎস্যবন্ধু, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড, জয় বাংলা থেকে জয় জোহর, বার্ধক্য ভাতা থেকে বিধবা ভাতা, বাংলা শস্য বিমা যোজনা থেকে বাংলার বাড়ি, স্বাস্থ্যসাথী থেকে খাদ্যসাথী।
মমতার দেখানো পথে হেঁটেই যে দারিদ্রতাকে দূর করা যাবে এটা এখন মানছেন INDIA জোটের শরিক নেতারাও। তাই তাঁরাও চাইছেন, ২৪’র ভোটে ক্ষমতার অলিন্দে পালাবদল হলে মমতার পথে হেঁটেই নিপীড়িত, বঞ্চিত, ক্ষতবিক্ষত ভারতকে মাতৃস্নেহে সারিয়ে তুলুন মমতা। একমাত্র তিনিই পারেন রক্তাক্ত, নিগৃহীত, লাঞ্চিত ভারতকে ফের বাঁচিয়ে তুলতে। মমতার কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, ঐক্যশ্রী, মেধাশ্রী, যোগ্যশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, সবুজসাথী, কৃষকবন্ধু, মৎস্যবন্ধু, তপশিলীবন্ধুর মতো প্রকল্পের সুবিধা পাক সারা ভারতবর্ষের মানুষ। দারিদ্রতাকে জয় করুক মহাত্মার INDIA।